নিউজ ডেক্স : সৌদি আরবে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারায় এক প্রবাসী বাংলাদেশীর লাশ ১৭ দিন ধরে মর্গে পড়ে আছে। সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বিল বকেয়া থাকায় লাশটি দাফনের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হস্তান্তর করছে না বলে জানা গেছে। শহীদুল ইসলাম নামে হতভাগা এই প্রবাসীর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ার কাকারা ইউনিয়নে।
সৌদি আরব থেকে শহীদুলের বড় ভাই মোজাম্মেল হক বলেন, মৃত্যুর পর আমরা প্রতিদিন হাসপাতালে যোগাযোগ করে তার আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় লাশটি ছাড়ার অনুরোধ করি। কিন্তু বকেয়া বিল পরিশোধ না করলে তারা লাশ ছাড়বে না বলে আমাদের জানিয়ে দেয়। ইতোমধ্যে আমরা ১৫ হাজার রিয়েল জমা দিয়েছি। এখানে আমাদের আর্থিক অবস্থাও তেমন ভালো না।
শহীদুলের স্বজনরা জানান, ২০০৪ সাল থেকে সৌদি আরবে বৈধ ভিসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন শহীদুল। দেশে তার স্ত্রী, তিন মেয়ে এবং মা রয়েছে। তিন মাস থাকার পর সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বর তিনি সৌদি আরবে ফিরে যান। সেখানে কর্মরত অবস্থায় গত ২ আগস্ট হঠাৎ শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে বন্ধু-বান্ধবরা তাকে স্থানীয় আসির এলাকার সৌদি-জার্মান হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ আগস্ট মারা যান শহীদুল ইসলাম। এরপর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সৌদি আরবে থাকা তার স্বজনরা তাকে সেখানেই দাফনের সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানান। কিন্তু সৌদি-জার্মান হাসপাতালে তার চিকিৎসার বিল আসে ৮৭ হাজার ৯৫০ রিয়াল। এর মধ্যে ১৫ হাজার রিয়াল চিকিৎসার সময় জমা দেয় শহীদুলের পরিবার। বাকি ৭২ হাজার ৯৫০ রিয়াল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ টাকা) দিতে না পারায় মর্গ থেকে লাশটি ছাড় করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় গত ১৫ আগস্ট থেকে এখনো পর্যন্ত লাশটি হাসপাতালে পড়ে আছে।
শহীদুলের বাড়ি কাকারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। তার বড় ভাই মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমাদের কতটা দুর্ভাগ্য যে, মারা যাওয়ার পর লাশটি এখনও দাফন করতে পারলাম না। তার তিন মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ের বয়স মাত্র এক মাস। বড় মেয়েটি ৬ বছরের।
কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত ওসমান বলেন, পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী শহীদুলের লাশ দাফন সৌদি আরবে সম্পন্ন করার জন্য আমি আবেদনে স্বাক্ষর করেছি। আমি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী মহোদয় এবং ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের কাছে আবেদন জানাচ্ছি- মানবিক দিক বিবেচনায় সরকারি তহবিল থেকে টাকা দিয়ে যাতে দ্রুত লাশটি দাফন করা যায়।’ দৈনিক আজাদী