নিউজ ডেক্স : সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় সাগরে নেমে দুই সপ্তাহে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর সেখানে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। গতকাল রবিবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. ইফতেখার হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে পুঁজি করে স্থানীয় ঘাটের ইজারাদার এম এ কাসেম (রাজা) সেখানে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যক্তি উদ্যোগে পর্যটন স্পট গড়ে তোলেন। কিন্তু সরকারিভাবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় সৈকতে প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা দুই ছাত্র গোসল করতে নেমে সাগরে ভেসে যায়। পরদিন ২২ জুন তাদের লাশ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। একইভাবে গত ৬ জুলাই চট্টগ্রামের ঝাউতলা থেকে আসা একটি দল সাগরে নামলে তিনজন ভেসে মারা যায়। ৭ জুলাই তাদের লাশ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা।
প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ঘাটের ইজারাদার রাজাকে বাঁশবাড়িয়ায় পর্যটকদের আগমন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর সেখানে কোনো ঘটনা ঘটলে প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়ে দেন।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘পাঁচজনের মৃত্যুর পর প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। আমাকে সীতাকুণ্ড থানা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শম্পা রানী সাহা ও থানার ওসি পৃথকভাবে ফোন করে আর কোনো দর্শনার্থী যেন সাগরে যেতে না পারে সে জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।’ তাঁরা আরো বলেছেন, ‘যদি আর কেউ সাগরে গিয়ে মারা যান তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নেওয়া হবে।’ তিনি আরো বলেন, এখানে শুধু সাগর পার আছে। কোনো বালুচরও নেই। সাগরে সব কাদা। তাই একটু দূরে গেলেই কাদায় আটকে যায়। তার পরও না বুঝে অতি উত্সাহী দর্শনার্থীরা এখানে এসে কাদাপানিতে নেমে মারা পড়ছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. ইফতেখার হাসান বলেন, ‘সেখানে একটি সন্দ্বীপ যাওয়ার ঘাট আছে। দর্শনার্থীরা শুধু এই ঘাটে যাতায়াত করুক অসুবিধা নেই। কিন্তু এই সাগর পারে বেড়াতে গিয়ে বারবার মানুষ মারা যাবে আর তার দায় আমরা নেব কেন?’ কোনো দর্শনার্থী যেন সেখানে না যায় সে পরামর্শও দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তারিকুল আলম বলেন, ‘আমরা দর্শনার্থীদের সাগরে না নামতে প্রচুর প্রচার চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। তাই দর্শনার্থীরা না এলেই একমাত্র দুর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব।’