নিউজ ডেক্স : দেশের অর্থনীতির প্রাণসঞ্চারকারী- ‘কর্ণফুলী নদী’র উভয় পাড়ে বছরের পর বছর অবৈধদখলদারদের স্থাপনা শীঘ্রই উচ্ছেদ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে যদি হাই কোর্টে কোন মামলা না থাকে তাহলে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যত টাকা লাগবে সব দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। বছরের পর বছর দেশের গুরুত্বপূর্ণ নদী বন্দর-কর্ণফুলীর উভয় তীরে অসংখ্য বস্তি-দোকান, মার্কেট ও ছোট-বড় মিল-কারখানা গড়ে তুলেছে প্রভাবশালীরা।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী হচ্ছে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রাণ। এই গুরুত্বপূর্ণ নদীর উভয় পাশে প্রভাবশালীদের এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হাই কোর্ট থেকে বারবার নির্দেশনা দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে বারবার বলা হয়েছে অর্থের অভাবে উচ্ছেদ চালানো যাচ্ছে না। এবার ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ সাহসিকতার সাথে সাংবাদিকদের জানালেন শীঘ্রই কর্ণফুলীর উভয় তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। যত প্রভাবশালীই হোক উচ্ছেদ হবে। উচ্ছেদের টাকা আমি দেবো। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, এই অবৈধ স্থাপনা থেকে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য চলছে। স্থানীয় অবৈধ বস্তিবাসী ও দোকান-মার্কেটের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই টাকা শুধু স্থানীয় প্রভাবশালীরাই ভোগ করছে তা নয়। এই ভাগ-প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরেও দিতে হয়। কর্ণফুলী নদীর তীরে গড়ে উঠা ২ হাজার ২১২টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে হাই কোর্ট কর্ণফুলী নদীর উভয় পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছিল চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি। আদেশের ৯০ দিনের মধ্যেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কোন কার্যকর উদ্যোগ না নেয়ায় গত বছরের জুন মাসে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ ৮ জনকে আদালত অবমাননার আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। জানা গেছে, উচ্ছেদের জন্য মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকার প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এ পর্যন্ত তিন দফায় টাকা চাওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তারপরও সাড়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ দখল-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন নিয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়। রিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত একটি রুল জারি করেন।
সূত্র : দৈনিক আজাদী