Home | ব্রেকিং নিউজ | লোহাগাড়ায় লোকালয় ও কৃষিজমিতে ইটভাটা!

লোহাগাড়ায় লোকালয় ও কৃষিজমিতে ইটভাটা!

585

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় লোকালয়, বনাঞ্চল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ও কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। পোড়ানো হচ্ছে বনাঞ্চলের কাঠ। এতে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জমিতে ফসল ও গাছে ফল হচ্ছে না। ধোঁয়া ও ধুলাবালির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঠিক মতো ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। এসবের গতি প্রতিরোধ না করলে এলাকায় মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে।

জানা যায়, গত ১০ বছরে প্রায় আড়াই হাজার একর জমি ইটভাটাসহ বিভিন্নভাবে অকৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন দশমিক ৯ হেক্টর জমি চলে যাচ্ছে অকৃষি জমিতে। উপজেলার শতশত একর কৃষি জমি ইটভাটার দখলে। ইট তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ফসলী জমির টপসয়েল। এতে জমির উৎপাদন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র মতে, লোহাগাড়ায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা রয়েছে। শুধু চরম্বা ইউনিয়নেই রয়েছে ২১টি। ইটভাটা করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স ও কৃষি বিভাগের অনুমতিপত্র লাগে। এসব ইটভাটার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সচেতন মহলে। বনাঞ্চলের পাশে, লোকালয়ে ও কৃষি জমিতে এসব ইটভাটা অবস্থিত। তবে প্রায়ই ইটভাটা কৃষি জমির ওপর এবং প্রতিটি ইটভাটায় কৃষি জমি লেগেছে প্রায় ৭ একর। ইটভাটায় ব্যবহার হচ্ছে কৃষি জমির টপসয়েল। ইটভাটায় পাহাড় ও টিলা কাটা নিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ফলে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা করার কোনো নিয়ম নেই। কৃষি জমির টপসয়েল নিয়ে গেলে প্রথম দুই বছর প্রায় ৭০ ভাগ ফসল কমে যায়। কৃষি জমির টপসয়েল চলে গেলে আগামী ৮ থেকে ১০ বছরে জমির স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসা কঠিন। উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় কৃষি জমিতে ইটভাটা তৈরি না করার জন্য জোরালো প্রস্তাব রাখা হয়। নতুন এলাকার কৃষকদেরকেও কৃষি জমির টপসয়েল বিক্রি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কৃষি জমির টপসয়েল ইটভাটায় যেন ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য কৃষকদের সচেতন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৌছিফ আহমেদ জানান, লোহাগাড়ায় ইটভাটাগুলো এক দিনে গড়ে উঠেনি। এখানে অবৈধভাবে কোনো ইটভাটা পরিচালিত হতে পারবে না। অবৈধ ও অনুমোদনহীন ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইটভাটায় কৃষি জমির টপসয়েল ব্যবহার ও পাহাড়ের মাটি কাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন সবসময় জিরো টলারেন্সে। লোহাগাড়ায় ইটভাটাগুলো অধিকাংশ ইটভাটা কৃষি জমির ওপর। উপজেলায় যে হারে কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে তাতে ভবিষ্যতে পরিবেশ ও খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইটভাটা পরিবেশ বান্ধব করা না গেলে মানব স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।

লোকালয়, বনাঞ্চল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ও কৃষিজমিতে গড়ে উঠা ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!