এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় ভাঙ্গন আতঙ্কে খাল পাড়ের বাসিন্দারা কালযাপন করছেন। ভাঙ্গছে খাল, বিধ্বস্ত হচ্ছে ভেড়িবাঁধ-ব্রীজ, বিপন্ন হচ্ছে জনজীবন। কিন্তু নজরদারি নেই সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, অতীত ও সাম্প্রতিককালের বন্যা বিধ্বস্ত খালের ভেড়িবাঁধ সমূহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জন্য এক প্রকার মরণ ফাঁদ। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে প্রাণহানির আশংকা, ভয়-ভীতি ও আতঙ্কে ওই এলাকার লোকজন বিনিদ্ররজনী যাপন করে থাকেন। উপজেলার টংকাবতী, ডলু, হাতিয়া, হাঙ্গর, কূলপাগলী, থমথমিয়া প্রভৃতি খালসমূহ উল্লেখযোগ্য। টংকাবতী খালের ভেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত ও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা, কলাউজান ইউনিয়নের মিয়াজি পাড়া, রসুলাবাদ, চিববাড়ি এলাকা সংলগ্ন পাড়া, আমিরাবাদ ইউনিয়নের তেওয়ারীখীল, চেয়ারম্যান ঘাটা, রাজঘাটা, ঘোনাপাড়া, মহুরী পাড়া, বণিক পাড়া, জলদাশ পাড়া, তুলাতলি বাজার, ধোপা পাড়া প্রভৃতি এলাকার বিভিন্ন স্থানে। একই ইউনিয়নের ডলুখালের ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে পশ্চিম আমিরাবাদস্থ ব্রীজের উত্তর ও দক্ষিণাংশের ভেড়িবাঁধ তথা যাতায়াত সড়ক। হাতিয়ার খালের বানের পানিতে বিধ্বস্ত হয় আধুনগর ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া ও পাল পাড়া সংলগ্ন ভেড়িবাঁধ। উক্ত এলাকা ডলু ও হাতিয়ার খালদ্বয়ের বানের পানির মিশ্র প্লাবনে প্লাবিত হয় প্রতি বছর। ডলু খালের ভাঙ্গনে বিধ্বস্ত হয় চাঁন্দা ব্রীজ ও খয়রাতি খাল ব্রীজ। ভেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত অব্যাহত রয়েছে উত্তর হরিণা মিয়াজি পাড়া ও নারিশ্চা গ্রামের অংশ। অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনে পুটিবিলার সরই খালের ব্রীজ ও ভেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। টংকাবতী খালের ভাঙ্গনে চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকার বিশাল জনবসতি খালের গর্ভেবিলীন হচ্ছে।
হাঙ্গর খালের বানের পানিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পদুয়া ইউনিয়নের জনবসতি এলাকা, ফসলী ক্ষেত ও হাঙ্গর ব্রীজের উপরিভাগের জনবসতি এলাকা প্রভৃতি। অব্যাহত খালের পাড় ভাঙ্গন ও ভেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে বিভিন্ন খালের পাড়ের জনবসতির বাসিন্দারা আবেগ-উৎকন্ঠা ও আতঙ্কে কালযাপন করছেন। কোন কোন স্থানে বাড়িঘর খালের গর্ভে ধসে পড়ায় লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে কালযাপন করছেন। বিশেষ করে পেঠান শাহ’র পুরাতন বাড়ি সংযুক্ত পাড়ার কয়েকটি ঘর বর্তমানে মারাত্মকভাবে খালেরগর্ভে ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় প্রাণহানীসহ বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি ঘটতে পারে।
অপরদিকে, যে কোন সময় বাড়িঘর ধসে পড়ার আশংকায় রয়েছে। আর্থিক দূরাবস্থার কারণে অন্যত্র বসতবাড়ি তৈরি করে আশ্রয় নিতে পারছেন না। বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, তাঁদের ক্ষয়ক্ষতির প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারি নেই। তাঁরা খালের পাড় সংলগ্ন জনবসতি এলাকার ভাঙ্গন রোধ ও বিধ্বস্ত ভেড়িবাঁধ পুণঃ মেরামতের জন্য জরুরী ভিত্তিতে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।