আন্তর্জাতিক ডেক্স : লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং আহত হয়েছেন চার হাজারের বেশি। ধ্বংসস্তুপের নিচে অনেকে আটকা থাকায় হতাহতের এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বুধবার স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বৈরুত বিস্ফোরণের ব্যাপারে এ তথ্য দিয়েছেন লেবাননের রেড ক্রসের প্রধান জর্জ কিত্তানেহ।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এলবিসিআই টিভিকে টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে জর্জ বলেন, হাসপাতালগুলোতে ব্যাপক চাপ তৈরি হওয়ায় লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে মর্গে মরদেহ সমন্বয় করছে রেডক্রস।
এক বিবৃতিতে লেবানিজ রেড ক্রস বলছে, বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৪ হাজারের বেশি মানুষ আহত এবং শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। আমাদের উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা এখনও বিস্ফোরণস্থল ও আশপাশের ধ্বংসস্তুপে তল্লাশি এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছেন।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টার পর বৈরুতের বন্দরের পাশের একটি গুদামে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে শতাধিক নিহত ও আরও চার হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তুপে অনেকেই আটকা পড়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে লড়াইরত লেবাননে গত কয়েকবছরের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় ধরনের বিস্ফোরণ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোনও ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই বৈরুতের বন্দরের গুদামে ছয় বছর ধরে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুদ করে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বৈরুত বিস্ফোরণের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছেন, সন্ধ্যা ৬টার কিছুটা পরের ঘটনা। হঠাৎ করেই বৈরুতের বন্দরের পাশে গোলাপী রঙয়ের ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে যায়। গম্বুজের মতো বিশালাকার ধোঁয়ার কুন্ডলী কিছুক্ষণ ওড়ার পর প্রলয়ঙ্করী শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো নগরী।
অনেকেই মনে করেছিলেন, সম্ভবত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। বিস্ফোরণের পর দেখা যায়, রাস্তায় অসংখ্য গ্লাস পড়ে আছে। কিছু গাড়ি উল্টে গেছে। গাছপালা পুড়ে গেছে। রাস্তায় লেগে আছে রক্তের দাগ।
বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনের পর বৈরুতের মেয়র জামাল ইতানি বলেন, এটা একেবারে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। আমি নির্বাক। বিস্ফোরণে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি। ইতানি বলেন, এটি লেবানন এবং বৈরুতের জন্য এক বিপর্যয়।