আন্তর্জাতিক ডেক্স : রাশিয়ার পুরো সরকার পদত্যাগ করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ বুধবার তার সরকারের পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বুধবার রুশ প্রেসেডেন্ট পুতিন দেশটির সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রস্তাব দেয়ার পর গোটা সরকার পদত্যাগ করলো।
পুতিন আজ বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেন, রাশিয়ায় বড় ধরনের সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের নির্বাচনে পার্লামেন্টকে ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। দেশের সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য গণভোটেরও প্রস্তাব দেন পুতিন।
ভোটের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা না করেই তিনি বলেন, ‘সংবিধানের আমূল পরিবর্তনে দেশের মানুষের মধ্যে ভোট হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি। এদিকে পুতিনের কাছে পদত্যাগপত্র দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ এখন রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারকারী নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
রাশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, দেশটিতে কেউ দুই মেয়াদের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না। ফলে ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুতিন বর্তমান সংবিধানের অধীনে আর রাশিয়ার নেতা থাকতে পারবেন না। তাই সংবিধান পরিবর্তনের এমন প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার স্থানীয় দৈনিক দ্য মস্কো টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের এই আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে পুতিন ভবিষ্যতে আবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসছেন। পুতিনের সমালোচকদের দাবি, অতীতের মতো সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই এ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা তার।
পুতিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর এক চালাকি করেন। সংবিধান সংশোধন করে তিনি প্রেসিডেন্টের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়িয়ে ওই বছর রুশ প্রধানমন্ত্রী হন। প্রেসিডেন্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তারপর ২০১২ ও ২০১৮ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন, তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে।
১৯৯৯ সালে তৎকালীন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। অনেক রুশ তখন জানত না কে এই পুতিন। তার কয়েক মাস পর ইয়েলৎসিন অনেকটা নাটকীয়ভাবে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন।
তারপর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়ার নেতা। ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা না থাকা নিয়ে খোদ রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন চলছে। তবে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সরকারই ক্ষমতায় থাকবে।