নিউজ ডেক্স : পড়ালেখার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বাধা নয়। এমনটাই প্রমাণ করলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মলি রাণী। ৩৫ বছর বয়সেও চলতি এসএসসি পরীক্ষায় নিজের ছেলের সঙ্গে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি। তার ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডুর বয়স ১৬।
রোববার বাগাতিপাড়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে মা মলি আর ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা দেন। মলি রাণী উপজেলার গালিমপুরের দেবব্রত কুমার মিন্টুর স্ত্রী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মলি রাণী জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বাবা নঁওগা জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুরের অসিত কুণ্ডু বিয়ে দেন। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি।
সংসারের চাপে পিষ্ট হয়ে গৃহিণীই রয়ে যান তিনি। এরই মধ্যে দুটি সন্তানের জন্ম দেন। বড় ছেলে মৃন্ময় কুমার কুণ্ডু বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কারিগরি শাখায় বিল্ডিং মেইনটেনেন্স ট্রেডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ছোট ছেলে পাপন কুন্ডু তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।
তিনি আরও জানান, ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তার নিজের পড়ালেখা জানা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডে ভর্তি হন। চলতি বছর একই বইয়ে মা ও ছেলে লেখাপড়া করে ওই বিদ্যালয় থেকে তিনি এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
স্বামী মিষ্টি দোকানদার হয়েও তাকে পড়ালেখায় বেশ সহযোগিতা করেন। সারাদিন সংসারের কাজ সেরে রাত জেগে পড়ালেখা করে পরীক্ষায় অংশ নিয়েও ভালো প্রস্তুতি নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মলি রাণী।
ছেলের সঙ্গে পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে মলি কুণ্ডু বলেন, ভাগ্যক্রমে ছেলের সঙ্গেই এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ হলো। দুজন একই বই পড়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ভেতরে-ভেতরে আমাদের বেশ প্রতিযোগিতাও শুরু হয়ে যায়। ছেলে ঘুমিয়ে পড়লেও আমি রাত জেগে পড়েছি। ছেলে টের পেলে সে-ও ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসতো। এভাবেই আমাদের প্রস্তুতি ও পড়ালেখা চলে।