আন্তর্জাতিক ডেক্স : দশ দিন পর অবশেষে জানা গেল মার্কিন নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল। আর এটাও জানা গেল যে; চার বছর আগে মার্কিন জনগণ যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবার তারা সেখানে থেকে সরে আসলেন। পুরোপুরি ঘুরে গেল জনতার রায়। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফল এটাই জানাচ্ছে।
শনিবার ব্যাটলগ্রাউন্ড নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ায় ভোটের গণনা আর পুনর্গণনা পর্ব শেষ হয়েছে। ফলাফলে ইতোমধ্যেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ঘোষিত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল কলেজে জয় পেয়েছেন। তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী তথা বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে ২৩২টি ভোট।
তবে এখনও সরকারিভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষিত হয়নি। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পও নিজের পরাজয় এখনও স্বীকার করে নেননি। জালিয়াতির অভিযোগ তুলছেন তিনি। তবে ৫৩৮ ভোটের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ‘ম্যাজিক ফিগার’ ২৭০ আগেই ছুঁয়ে ফেলায় জয়ী ঘোষিত হন জো বাইডেন।
তবে এবারের সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে গত নির্বাচনের (২০১৬) ফলের পুনরাবৃত্তি হয়েছে এবার। গতবার ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে ৩০৬-২৩২ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার ট্রাম্পকে ঠিক একই ভোটের ব্যবধানে হারালেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন।
পুনর্গণনার পরও জর্জিয়ায় জিতেছেন বাইডেন। ওই অঙ্গরাজ্যে ১৬টি ইলেকটোরাল ভোটের দখল নিয়েছেন তিনি। যদিও দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মোট প্রাপ্ত ভোটের (আমেরিকার নির্বাচনী পরিভাষায় পপুলার ভোট বা জনপ্রিয় ভোট) ব্যবধান সামান্য। বাইডেন ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ট্রাম্প ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ।
অন্য দিকে, আরেক ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলাইনার ১৫টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন ট্রাম্প। ওই অঙ্গরাজ্যে ৫০ শতাংশ পপুলার ভোট পেয়েছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে সামগ্রিকভাবে পপুলার ভোটের হিসাবে অবশ্য পিছিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প। ২০১৪ সালেও পপুলার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন তিনি।
গতবারের নির্বাচনে মার্কিন ভোটারদের ৪৮ শতাংশ সমর্থন করেছিলেন হিলারি ক্লিনটনকে। অপরদিকে ৪৬ শতাংশের একটু বেশি ভোট পেয়েও দেশটির নির্বাচনী পদ্ধতি অর্থাৎ ইলেকটোরাল কলেজের পাটিগণিতে জয়ী হন ট্রাম্প। ওই বার ট্রাম্প যত ভোট পেয়েছিলেন তার চেয়ে প্রায় ত্রিশ লাখ ভোট বেশি পেয়েছিলেন হিলারি।
তবে ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলের ভোটের হিসাবে বাইডেনের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে ট্রাম্প। সাধারণত দেশটির গ্রামাঞ্চলের ভোটাররা রিপাবলিকানদের সমর্থক। ট্রাম্প সরকারের বিরুদ্ধে বাইডেন করোনা মহামারি সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুললেও গ্রামাঞ্চলের ভোটদাতারা তা উপেক্ষা করেছেন।