নিউজ ডেক্স : ভারতে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে স্বীকার করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ভারত সরকার ভিসা বাতিল করার পর গতকাল মঙ্গলবার দেশে ফিরে আসা ফেরদৌস আজ বুধবার এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনোভাবেই উচিত নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’
এদিকে আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ফেরদৌসের পর বাংলাদেশি অভিনেতা জি বাংলার রানী রাস মনি সিরিয়ালখ্যাত গাজী আবদুন নূরের বিরুদ্ধেও ভারতে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছে। শর্ত ভাঙার দায়ে গাজী আবদুন নূরেরও ভিসা বাতিল করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবি ওঠেছে। তবে তৃণমূল নেতা ও সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্র অভিনেতা গাজী আবদুন নূরের ভোটের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
ভারতের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে চিত্র নায়ক ফেরদৌস আজ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভিনয় শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সকলের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে, আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ।’
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। সেখানে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু, যাদের সঙ্গে আমি সবসময়ে হূদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আমি সেখানে চাই।
ফেরদৌস বলেন, ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহত্ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সারাবিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়গায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনি প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি। এটা পূর্বপরিকল্পনার কোনো অংশ ছিল না।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোনো বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
ফেরদৌস বলেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের প্রচারণায় আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগ তাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে এই নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল। যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন।