নিউজ ডেক্স : ভরা মৌসুমেও মাছের রাজা ইলিশের দাম ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেল। নগরীর মাছের বাজারগুলো রূপালি ইলিশের ঝিলিকে ভরে উঠলেও পর্যাপ্ত মাছ না আসার অজুহাতে দাম কমাচ্ছে না বিক্রেতারা। তাদের দাবি বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা ঠিকমত সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারছে না বলে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ আসছে না। ফলে দাম এখনও চড়া। একইভাবে দাম চড়া অন্যান্য মাছেরও।
অন্যদিকে ঈদ-উল-আযহার আগে ও পরে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া সবজির দাম এখন অনেকটা স্বাভাবিক। গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় প্রকারভেদে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। চাহিদা কম থাকায় দাম কমেছে মাংসের। ফলে স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মধ্যে। গতকাল নগরীর কাজীর দেউড়ি, চকবাজার এবং বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে গিয়ে একাধিক ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে উপরের চিত্রটি পাওয়া গেছে।
বহদ্দারহাট মাছের বাজারে কথা হয় অটোরিকশাচালক মো. নোমানের সাথে। তিনি বলেন, ‘বাজারে এসেছিলাম একটা ইলিশ কিনব বলে। কিন’ দাম শুনে আপাতত ইলিশ খাওয়ার কথা বাদ দিতে হলো। কারণ মাঝারি আকারের একটা ইলিশের পেছনে আমার দুই দিনের ইনকাম চলে যায়।’
বহদ্দারহাটের মাছ বিক্রেতা মো. ফিরোজের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘ঈদ-উল-আযহার পর মাংসের একঘেঁয়েমির হাত থেকে বাঁচতে মানুষ মাছের দিকেই বেশি ঝুঁকে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। কিন’ সে তুলনায় বাজারে মাছ নাই। অন্যদিকে বাজারে ইলিশ চোখে পড়লেও চাহিদার তুলনায় তা কম। দুইদিন পর পর লঘুচাপ, নিম্নচাপের কারণে সাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে জেলেরা ঠিকমত মাছ ধরতে যেতে পারছে না। ফলে ভরা মৌসুম হওয়ার সত্ত্বেও ইলিশের দাম এখনো চড়া। তাছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যের কারণেও মাছ বাজারে আসতে আসতে দাম কিছুটা বেড়ে যায়।’
সবজির বাজারে গতকাল প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছে ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৭০-৮০ টাকা, কাকরোল ৪০ টাকা, বেগুন ৪৫-৫০ টাকা, তিত কড়লা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পটল ৪০-৪৫ টাকা, ঢ়েঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, দেশি লাউ ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ও মিষ্টিকুমড়া ২৫ টাকা, শসা ৩০ টাকা, কচুর লতি ৩০ টাকা, কচুর ছড়া ৩৫ টাকা, কচুর পোপা ৩০ টাকা, ললিত আলু ২০ টাকা এবং দেশি আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাকি সব সবজির মতো বাজারে নতুন আসা আগাম শীতকালীন সবজির দামও গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা কমেছে। গতকাল প্রতিকেজি দেশি শিম ৮০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, ফুলকপি ৮০-১০০ টাকা এবং বাঁধাকপি ১০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া সবজির বাজারে গতকাল মাঝারি সাইজের এক আঁটি মিষ্টিকুমড়া শাক বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা, পাট শাক ২৫-৩০ টাকা, লাল শাক ২৫-৩০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা, পালং শাক ১৫-২০ টাকা এবং জোড়া আঁটি কলমি শাক ১৫-২০ টাকায়।
অন্যদিকে গতকাল প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২৫-১৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা, পাকিস্তানি সোনালি মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা ও প্রতিকেজি দেশি মুরগি ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ছাগলের মাংস ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস হাঁড়সহ ৪৫০-৪৮০ টাকা ও হাঁড় ছাড়া ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সূত্র : দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ