নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পলাতক আসামিকে ধরতে গিয়ে তারই দায়ের কোপে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবল জনি খান এখন শঙ্কা মুক্ত। অস্ত্রোপচারে লাগানো হয়েছে কবজি। তবে এখনো ফেরেনি পূর্ণ অনুভূতি। হাতটি পুরোমাত্রায় সক্রিয় হতে বেশ কয়েক মাস লাগতে পারে।
রাজধানীর আল মানার হাসপাতালে জনি খানের হাতের অস্ত্রোপচার করার পর তাকে ওই হাসপাতাল থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের অপারেশন্স ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শাখার পরিচালক ডা. মো. শহিদুল্লাহ।
রবিবার সন্ধ্যায় ডা. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল জনি খানকে অস্ত্রোপচারের কিছুদিন পরই আমাদের হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়। তিনি এখন রাজারবাগ হাসপাতালে আছেন, ভালো আছেন।’
‘তার হাত জোড়া লাগানো হয়েছে। ওপরের চামড়া পুরোটায় জোড়া লেগে গেছে। এখন মাংসের ভিতরের কিছুটা অংশ বাকি আছে। আগামী ৫ থেকে ৬ মাসের মধ্যে তিনি হাতে আগের মতো অনুভূতি ফিরে পাবেন।’
গত ১৬ মে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার ফোর্সের সঙ্গে আসামি ধরতে যান পুলিশ সদস্য জনি। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি কবির আহমদ ধারালো দা দিয়ে পুলিশ সদস্য জনি খানের হাতে কোপ দিয়ে পালিয়ে যান। এতে তার হাত থেকে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
জনিকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য র্যাবের হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় এনে মোহাম্মদপুরের বেসরকারি আল মানার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডা. মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘জনি খানের হাত জোড়া লাগাতে প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা সময় লেগেছে। সব মিলিয়ে ৩২ বারের মতো অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এ ধরনের অপারেশন ৬ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না এলে হাত জোড়া লাগানো সম্ভব হতো না।’
আল মানার হাসপাতালের অপারেশন্স ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট শাখার পরিচালক জানান, ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের টিম অস্ত্রোপচার করেন। টিমের অন্য চিকিৎসকরা হলেন- হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জন ডা. হাসান নাজিরুদ্দীন সুমন, ডা. শাকেরা, অ্যানেসথেসিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. আলাউদ্দীন ও ডা. মোস্তফা কামরুল ইসলাম।
রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব রহমান বলেন, ‘আল মানার হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে জনির চিকিৎসা চলছে। তিনি এখন শারীরিকভাবে অনেকটাই সুস্থ। আমরা চাই জনি পুরো সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরুক।’
এদিকে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, জনি ভালো আছে। তার খোঁজখবর রাখার জন্য সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শ্যামল সূত্রধরকে নিয়োজিত রাখা হয়েছে।
ওসি আতিকুর বলেন, ‘তারা বর্তমানে ঢাকাতেই আছেন। কবে নাগাদ কর্মস্থলে ফিরতে পারবেন এখনই কিছু বলতে পারছি না। চিকিৎসকদের ওপরে নির্ভর করছে। তারা সব ঠিকঠাক আছে বললেই অফিস করবেন জনি।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী নোমান বলেন, ‘জনির কাটা হাতের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। তার ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে লোহাগাড়া থানায় কবির, তার মা ও স্ত্রী রুবি আক্তারকে আসামি করে মামলা করেছে। এতে কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার আছে।’ -ঢাকাটাইমস