নিউজ ডেক্স : সার্কিট হাউজ থেকে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে থাকা যাদুঘর সরিয়ে ফেলা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে দেয়া তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে নগর বিএনপি। দলটির নেতারা দাবি করেছেন, জিয়া পরিবার ও জিয়া জাদুঘর সম্পর্কে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য ‘অশালীন’, ‘কুরুচিপূর্ণ’ ও ‘শিষ্টাচার বহির্ভূত’।
প্রতিমন্ত্রীকে নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার করে ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ জিয়াউর রহমান সম্পর্কে জানতে মহান মুক্তিযুদ্ধ সময়ের প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি পাঠ করে ইতিহাস জানার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। গতকাল গণমাধ্যমে প্রেরিত নগর বিএনপি’র এক বিবৃতিতে এ আহবান জানানো হয়। সংগঠটির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর উক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।
প্রসঙ্গত, গত রোববার চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র পরিদর্শনকালে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান ঘোষণা দিয়েছেন, চট্টগ্রামের পুরাতন সার্কিট হাউজে জিয়ার নামে চলা যাদুঘর সরিয়ে ফেলা হবে। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন গুপ্তঘাতক ও পাকিস্তানের দালাল। একইদিন বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘কুলাঙ্গার’ আখায়িত করেন এবং বেগম খালেদা জিয়া ‘চিত্র নায়িকা হতে চেয়েছিলেন’ বলেও মন্তব্য করেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘বেগম জিয়া চলচ্চিত্র নায়িকা হতে চেয়েছিলেন’, প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে বিএনপি নেতৃবৃন্দ জানতে চান, প্রতিমন্ত্রীর বয়স তো এখন মাত্র ৪৫/৫০ হবে। এই বিষয়টি তিনি জানলেন কীভাবে?” বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের তিনি (প্রতিমন্ত্রী) বিএনপির দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিএনপি করলে যদি বিএনপির দালাল হয় তাহলে তিনি (মন্ত্রী) আওয়ামী লীগ করেন, তাহলে তিনিও (মন্ত্রী) আওয়ামী লীগের দালাল? বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে থাকার জন্যই মন্ত্রীরা শহীদ জিয়াকে নিয়ে পাগলের প্রলাপ বকছেন। তাদের মতো লোকদের একমাত্র কাজ হচ্ছে মিথ্যাচার, বিষোদগার, চরিত্র হনন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা।
বিবৃতিতে বলা হয়, একজন মন্ত্রীর কথাবার্তায় শালীনতা থাকা বাঞ্ছনীয়। তাঁদের কাছে নতুন প্রজন্মের নাগরিকরা শালীন ও শিষ্টাচার আচরণ দেখতে চায়। বর্তমান সময়ে সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্যে এই সত্যটাই উঠে এসেছে বাংলাদেশে একমাত্র বিএনপিই জনগণের রাজনৈতিক সংগঠন। একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতীক। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান হচ্ছেন দেশের স্বাধীনতা প্রিয় ও গণতন্ত্রকামী মানুষের নেতা। তাই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম শুনলে আওয়ামী লীগের লোকজন বাঘের মতো ভয় পান। তাই তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের ভয় তাড়াতে শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নামে জিকির তোলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ নেতারা আজ কেন শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে নিয়ে কথা বলছেন? কারণ তারা দেউলিয়া হয়ে গেছেন। চার ভাগ মানুষকেও এখনো টিকার আওতায় আনতে পারেননি। সরকার লকডাউন দিয়ে তা কার্যকর করতে পারেনি। কারণ, মানুষের ঘরে খাবার নেই, দেয়নি প্রণোদনা। যেটা দিয়েছেন সেটা লুটের জন্য। হাজার কোটি টাকা বিলি করলেও তা পেয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এসব লুটপাটের ঘটনা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতেই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো আওয়ামী লীগ নেতারা সামনে নিয়ে আসছেন।