নিউজ ডেক্স : প্রায় ছয় মাস ধরে অঘোষিতভাবে কর্মী নেয়া বন্ধ থাকার পর আবারও বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। তবে তারা কোনো অদক্ষ কর্মী নেবে না। বিভিন্ন খাতে দক্ষ কর্মীই দেশটির চাহিদা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিং সেন্টারে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে কাতারের শ্রম বাজারের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন প্রবাসীকল্যাণ সচিব সেলিম রেজা। এ সময় মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সচিব বলেন, কাতারে অনুষ্ঠিতব্য ‘ফিফা ২০২২’ এবং কাতারের ‘ভিশন ২০৩০’ উপলক্ষে সিকিউরিটি সার্ভিস, সেবা খাত ও অন্যান্য খাতে কাতারে ব্যাপক কর্মী চাহিদা রয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীদের সুনাম ও চাহিদাও ব্যাপক।
সেলিম রেজা জানান, গত ৩-৪ ফেব্রুয়ারি দোহায় দুই দেশের যৌথ কারিগরি কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়ে সম্মত হয় কাতার। কাতার জানিয়েছে, তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেক দক্ষ কর্মী নিতে চায়। তবে অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া কোনো কর্মী নেবে না কাতার। আমরা তাদের জানিয়েছি, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই কর্মীদের নাম নিবন্ধন শুরু করেছে। সেটা দেখতে শিগগিরই কাতারের একটি টিম বাংলাদেশ সফর করবে।
তিনি বলেন, আমরা পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ঢাকা জেলায় বিদেশ যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু করেছি। সেখানে এখন পর্যন্ত ২৩ হাজার কর্মী নিবন্ধন করেছেন। আগামী মাস থেকে সারাদেশে কর্মীদের নিবন্ধন শুরু হবে।
কাতার শূন্য খরচে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী উল্লেখ করে সচিব বলেন, কোনো কোনো কোম্পানি কর্মীর যাবতীয় খরচ বহন করবে। তবে যেসব কোম্পানি খরচ বহন করবে না, সেখানে ১ লাখ ৭৮০ টাকা (সরকার নির্ধারিত) খরচে কর্মী পাঠাতে হবে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে।
সেলিম রেজা জানান, যৌথ কমিটির সভায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি এবং তাদের স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণে দুদেশ একমত।
যৌথ কমিটির বৈঠকের পাশাপাশি কাতার সফরকালে প্রবাসীকল্যাণ সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল কাতারের বিভিন্ন কোম্পানি ও বাংলাদেশি কর্মীদের ক্যাম্প ও কর্মস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, কাতার তাদের বৃহত্তম পরিবহন সেবা প্রতিষ্ঠান মোয়াসালাতে গাড়িচালক, বিশেষ করে ভারীযানের চালকের দরকার রয়েছে বলে জানিয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে দুই হাজার গাড়ি চালক চেয়েছে কাতার। তবে এসব চালকদের ইংরেজি ভাষা জানতে হবে বলে শর্ত দিয়েছে দেশটি। এ প্রসঙ্গে প্রবাসীকল্যাণ সচিব বলেন, ফিফা বিশ্বকাপে বিদেশি অতিথিদের আনাগোনা বেশি থাকবে। তাই চালকদের ইংরেজি ভাষা জানা প্রয়োজন। আমরা বলেছি, প্রায় এক লাখ চালককে প্রশিক্ষিত করছে বাংলাদেশ। তাদের ইংরেজির পাশাপাশি আরবি ভাষাও শেখানো হবে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বে অদক্ষ কর্মীদের চাহিদা কমে যাচ্ছে। সবাই দক্ষ কর্মী নিতে চায়। আমরা যত বেশি কর্মী দক্ষ করতে পারব, তত বেশি কর্মী বিদেশে পাঠাতে পারব।