Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কেউ মারা গেলে খুশিতে থাকতো বাপ্পী, জানাজাতেও অংশ নিতো

কেউ মারা গেলে খুশিতে থাকতো বাপ্পী, জানাজাতেও অংশ নিতো

নিউজ ডেক্স : ময়মনসিংহে একটি বাসা থেকে মানুষের ১২টি মাথার খুলি ও দুই বস্তা হাড় উদ্ধারের ঘটনায় বাপ্পী নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রীতিমতো হতবাক এলাকাবাসী জানায়, মানুষ মারা গেলে বাড়িসহ এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করে কিন্তু বাপ্পী থাকে খুশিতে। অবাক হলেও সত্য। এলাকায় কোনো মানুষ মরলেই এক ধরনের খুশি হতো বাপ্পী। তাদের জানাজাতেও অংশ নিতো সে।

শনিবার দিবাগত রাতে এসব খুলি ও হাড় উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির বাড়িতে থেকে মানুষের মরদেহে দ্রুত পচন ধরায় এমন রাসায়নিক পদার্থও উদ্ধার করা হয়েছে।এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানায়, কেউ মারা গেলে জানাজায় অংশগ্রহণ শেষে মুচকি হেসে বাসায় ফিরে যেতো। আর রাতের আঁধারেই নতুন কবরের লাশ তুলে নিজের বাসায় নিয়ে আসতো। এরপর লাশে কেমিক্যাল মিশিয়ে ঘুমাতে যেতো বাপ্পী। 

বাপ্পি ময়মনসিংহ নগরীর আর কে মিশন রোড এলাকায় ‘আশানীড়’ নামে একটি তিনতলা ভবনের দোতলায় থাকতো। সে নগরীর কালিবাড়ি কবরখানা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় কাইয়ুম নামে একজন বলেন, বাপ্পীর বাসার দোতলার বারান্দা পুরোটাই একটা পর্দা দিয়ে ঢাকা থাকত। বাসার জানালাও কখনো খোলা থাকতে দেখা যায়নি।

আবুল কালাম নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, বাপ্পীকে ঘরের বাইরে খুব একটা বের হতেও দেখিনি। তবে সে অনেক রাত জাগতো। রাত ৩টা বা ৪টা পর্যন্ত তার বাসার লাইট জ্বলতো। ভেতরে এত কিছু হতো তা আমাদের ধারণাতেই ছিল না।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, কঙ্কাল চুরি চক্রের সদস্যরা কবর থেকে লাশ তুলে কঙ্কাল সংগ্রহ করে চড়া দামে বিক্রি করে আসছিল। এমন সংবাদ পেয়ে শনিবার গভীর রাতে নগরীর আর কে মিশন রোড এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ১২টি মাথার খুলি, দুই বস্তা হাড়সহ বাপ্পীকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পী জানান, ওই বাসাতেই কঙ্কাল মজুত করা হত। সেখান থেকে পাচার করা হত বিভিন্ন স্থানে।

কঙ্কাল চুরি চক্রের সদস্যরা জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গোরস্থানের কবর খুঁড়ে লাশ চুরি করে বাপ্পীর কাছে পাঠাত। বাপ্পী মরদেহে নির্জন স্থান, গভীর অরণ্য বা পাহাড়ি জনপদে নিয়ে কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে পচিয়ে মাংস থেকে হাড় আলাদা করতেন। মাংস ছাড়ানোর পর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে মুছে পরিষ্কারও করতেন। পরে তুলে দিতেন পাচারকারীর হাতে। তাদের মাধ্যমে এই কঙ্কাল চলে যেত মেডিক্যাল শিক্ষার্থী-শিক্ষক, চিকিৎসকসহ পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভারতে।

বাপ্পীকে জিজ্ঞাসাবাদে সাতজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি ফিরোজ তালুকদার। বিডি-প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!