
নিউজ ডেক্স : কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজে চলছে ধীরগতি। চীন থেকে ইক্যুপমেন্ট চট্টগ্রাম আসতে না পারায় নির্মাণ কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তবে ঠিক কতদিন এভাবে কাজ চালানো যাবে তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। চীনের যেসব নাগরিক এ প্রকল্পে কাজ করছেন তারা কাজে থাকলেও দেশীয় লোকদের অনেকেই বাড়ি গিয়ে আটকা পড়েছেন। এতে অত্যন্ত ঢিমে তালে চলা এই প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রমে কোন গতি নেই। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কর্ণফুলীর তলদেশে গাড়ি চলার বিষয়টি নিয়েও সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, চীনের চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণ করছে। প্রকল্পটিতে ২৯৩ জন চীনা নাগরিকসহ বিপুল সংখ্যক দেশীয় প্রকৌশলী, শ্রমিক ও কর্মচারী কাজ করছেন। করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ায় প্রকল্পটিতে প্রথমে চীনা নাগরিকদের অনেকেই আসতে পারেননি। পরবর্তীতে চীনের নাগরিকদের প্রায় সকলেই এসে কাজে যোগ দিলেও বর্তমানে দেশীয় লোকদের অনুপস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এদিকে করোনার প্রভাবে চীনের কারখানা বন্ধ থাকায় এ প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ইক্যুপমেন্ট তৈরি বন্ধ ছিল। এরমধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি সেগম্যান্ট প্রকল্পটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলেও প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। কিন্তু এই সেগমেন্টই এখন আনা সম্ভব হচ্ছে না। চীনের কারখানায় উৎপাদিত সেগম্যান্ট টানেলের শক্ত দেয়াল হিসেবে কাজ করছে। চীনে তৈরি সেগমেন্ট এনে কর্ণফুলীর তলদেশে স্থাপন করে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। ৮টি সেগমেন্টে দুই মিটারের একটি রিং তৈরি করে। এভাবে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ মিটার করে টানেল নির্মাণের কাজ চলে। বর্তমানে এই সেগম্যান্ট আনা সম্ভব হচ্ছে না। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি শুরু হওয়া চীনের নিউ ইয়ারের ছুটিতে বন্ধ হওয়া সেগমেন্ট নির্মাণ কাজ করোনার কারণে বহুদিন বন্ধ ছিল।

ইতোমধ্যে চীনের কারখানা খুলে দেয়া হলেও বাংলাদেশে শুরু হওয়া লকডাউনে সব কার্যক্রমই থমকে গেছে। আমদানি রপ্তানির সাথে জড়িত বিভিন্ন অফিস বন্ধ থাকার পাশাপাশি চীনে মানুষের আসা যাওয়াও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে টানেল নির্মাণের কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। টানেল নির্মাণের কাজ পুরোদমে না হওয়ায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ১৪৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা খরচ করা সম্ভব হয়নি।
অতি সাম্প্রতিক হিসেবে প্রকল্পটির কাজ ৫২ শতাংশের মতো সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না বলে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টরা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, টানেল নির্মাণের কাজ একেবারে বন্ধ হয়নি। তবে যে অবস্থা চলছে তাতে ঠিক কতদিন কাজ চালানো যাবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এখন টানেলের কাজে গতি আনা সম্ভব হবে না। মানুষই আসতে পারছেন না। বাইরের মানুষ প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কর্ণফুলী টানেল প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, টানেল নির্মাণ কাজ কোনরকমে চলছে। বন্ধ হয়নি। আমরা কাজ চালু রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। দৈনিক আজাদী