ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে : জেলা প্রশাসক

কর্ণফুলীর অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে : জেলা প্রশাসক

P-1-3-7

নিউজ ডেক্স : কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর চট্টগ্রামের নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। একইসাথে মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স দেখাবে জেলা প্রশাসন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন। পাহাড়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাহাড় ধস ঠেকানো, কর্ণফুলী নদী ও চাক্তাই খালের দখল দূষণরোধে নতুন করে উদ্যোগ নেয়ার আশ্বাস দিয়ে নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রশাসনের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ইউএনও, এসি ল্যান্ডদের ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর এল এ শাখায় যাতে মানুষের তিপুরণের টাকা আটকে না থাকে সে ব্যাপারে কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিভাবে সেবা পৌঁছে দেয়া যায় সেই পরিকল্পনা রয়েছে। এমনকি সেবার উদ্ভাবনী পন্থা বের করার জন্যও কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আরো বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির লাইফলাইন। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ঢাকার পর চট্টগ্রামের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে ডিসি মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরেন সাংবাদিকরা। তাদের লেখনি থেকে সরকার ও প্রশাসন নানা কার্যক্রম গ্রহণ করে। দেশের উন্নয়নে সাংবাদিকদের অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ৪,২১৭ জন ভিক্ষুক চিহিৃত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৮০ জনকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাজেট চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই ভিক্ষুক পুনর্ববাসন করা হবে। এছাড়া হিজড়াদের জীবন–মান উন্নয়নেও কাজ করছে জেলা প্রশাসন। কর্ণফুলী নদীর বিষয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এডিসির দায়িত্ব পালনকালে কর্ণফুলী, চাক্তাই খাল ও পাহাড় ধস নিয়ে কাজ করেছি। অবৈধ দখলদার চিহিৃত করে সীমানা পিলার স্থাপন করেছি। কর্ণফুলী নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়া হবে।

চাক্তাই খাল নিয়ে সিটি করপোরেশন, সিডিএ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে কাজ করছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালের তীরে রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

পাহাড় ধসরোধ, যানজট নিরসনে নগরীতে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ, জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো–টলারেন্সে থাকবে জেলা প্রশাসন উল্লেখ করে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে দায়িত্ব নেয়ার পর পরই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। মাদক নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার অনুরোধ করেছি। নতুন প্রজন্মদের মাদকের কুফল থেকে রক্ষা করতে স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাবেশ করা হবে। এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান ফেরদৌস বলেন, চট্টগ্রামের নামীদামী স্কুলের ছেলেদের হাতে ইয়াবা প্রতিনিয়ত পৌঁছে যাচ্ছে। আমাদের সন্তানদের কি হবে ?

উত্তরে জেলা প্রশাসক ইয়াবা কিংবা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা উলেহ্মখ করে বলেন, আমি এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে কাজ করে এসেছি। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। সুতরাং মাদকের সাথে যেই–ই জড়িত থাকুক কোন ছাড় নয়।

দৈনিক আজাদীর সবুর শুভ এ সময় প্রশ্ন রেখে বলেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক সমন্বয় সভা হয়েছে। কিন্তু গত তিন কিংবা পাঁচ বছর আগে চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো যে অবস্থায় ছিল একটি পাহাড়ও বর্তমানে সেই অবস্থায় নেই। আগামী কয়েক বছর পরে সমন্বয় সভা কিংবা পাহাড় ব্যবস্থাপনার দরকার হবে না। পাহাড় না থাকলে ব্যবস্থাপনার কি দরকার? আর মাত্র ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচের জন্য কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হচ্ছে না। অথচ শতকোটি হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নেয়া হচ্ছে। জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, এখানে এডিসি থাকাকালে পাহাড় ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করেছি। যেকোন মূল্যে পাহাড়গুলোকে রক্ষা করা হবে। আর কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধভাবে গড়ে উঠে স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দিয়ে কর্ণফুলীকে রক্ষা করা হবে।

অপর এক প্রশ্নে চ্যানেল আই’র ব্যুরো প্রধান চৌধুরী ফরিদ বলেন, কর্ণফুলী নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের খরচ ১ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রয়োজনে চট্টগ্রামবাসী দেবে। তারপরও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চাই।

এসময় জেলা প্রশাসক বলেন, কর্ণফুলী নদীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। যে কোন সময় এ উচ্ছেদ শুরু করা হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ–পরিচালক (স্থানীয় সরকার) ইয়াছমিন আকতার তিরবীজি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. মমিনুর রশিদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাশহুদুল কবীর, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রুহুল আমীন প্রমুখ।

প্রসঙ্গত: কর্ণফুলীর দুই তীরে দুই হাজার ২১২টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা হয়েছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তরফে। -আজাদী প্রতিবেদন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!