নিউজ ডেক্স : সরকার জনগণকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীরবিক্রম।
সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। অলি আহমদ বলেন, ‘সরকার জনগণকে রক্তপাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা চাই শান্তি কিন্তু সরকার চায় অশান্তি।’
প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে ২০ দলীয় জোটের এ মুখপাত্র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা আপনি। এ দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে আপনার। দেশকে ধবংসের দিকে ঠেলে দেবেন না। সুষ্ঠু, অবাধ এবং রক্তপাতহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিন। কেউ চিরদিন বেঁচে থাকবে না, আমাদের সবাইকে একসময় বিদায় নিতে হবে। সেই বিদায় যেন সম্মানজনক হয়।’
রিটার্নিং কর্মকর্তারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট নেতাদের ফোন রিসিভ করেন না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের কাছে কমিটমেন্ট করেছিল নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ থাকবে। কিন্তু এরপর থেকে আমাদের টেলিফোনও রিসিভ করছে না। তাদের ভেতরও একটা আতঙ্ক কাজ করছে। আমরা যারা প্রার্থী আছি তারা যদি রিটার্নিং কর্মকর্তা কিংবা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে না পারি, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে না পারি তাহলে সমস্যাগুলোর প্রতিকার কোথায় পাবো?’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশে কর্নেল অলি বলেন, ‘২০ দলীয় জোট কিংবা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কারও শত্রু না। আমরা নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চাই। কিন্তু সেটা হচ্ছে না, সেই পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না। প্রশাসন নিজ থেকে নানা ঘটনা ঘটিয়ে গণহারে গ্রেফতার করছে। অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠাচ্ছে। যখন জামিনের সময় হয় তখন আরেকটা মামলা দিচ্ছে।’
বিচারকদের উদ্দেশে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘আপনারা কোনো না কোনো ধর্মের অনুসারী। আপনারা সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করেন না? যারা অন্যায় কাজে লিপ্ত তাদের জন্য খোদার তরফ থেকে শাস্তি নেমে আসবে। আমরা কারও সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ করছি না। বিচারকরা হচ্ছেন আল্লাহর প্রতিনিধি। আপনারা আইনি বই-পুস্তকে যা লেখা আছে সে অনুযায়ী বিচার করুন।’
নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি দাবি করে কর্নেল অলি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আমরা কারও গান শুনে, কথা শুনে মুক্তিযুদ্ধে যাই নাই। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং আমি সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম থেকে বিদ্রোহ করি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষ যেন সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে। আজকে মনে হচ্ছে আমরা নিজ দেশে পরাধীন।’
পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ করে অলি বলেন, ‘আপনারা আমাদের শত্রু না। সরকারেরও বন্ধু না। আপনারা জনগণের বন্ধু। দেশের মানুষের বন্ধু। সে হিসেবে সবাই যাতে ভোট দিতে পারে সে ব্যবস্থা করুন। আমরা চাচ্ছি সুষ্ঠু নির্বাচন, আমরা চাই শান্তি। আমরা বহুবার প্রেস কনফারেন্স করে বলেছি, আমরা কোনো অশান্তি চাই না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম-১১ আসনের প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ ইব্রাহীম বীরপ্রতীক, আবু সুফিয়ান প্রমুখ।