নিউজ ডেক্স : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ফলে অন্য কোনও মামলায় গ্রেফতার দেখানো না হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি পেতে আর কোনও বাধা নেই।

কারাবন্দি থাকার ৩২ দিনের মাথায় সোমবার (১২ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় এ জামিন আদেশ দেন। একইসঙ্গে আপিল শুনানির জন্য আগামী চার মাসের মধ্যে পেপার বুক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একই বেঞ্চে গতকাল রবিবার মামলাটির জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য কার্যতালিকার শীর্ষে রাখা ছিল। কিন্তু মামলার নথি না পৌঁছানোয় জামিনের ব্যাপারে আদেশের জন্য সময় পিছিয়ে সোমবার দিন ধার্য করেন আদালত।
এর পর রবিবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক আদালতের রায়ের নথিপত্র হাইকোর্টের আদান-প্রদান শাখায় পৌঁছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়াকে ৫ বছর ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৫ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে ৬ আসামিকে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই দিনই কড়া নিরাপত্তায় খালেদা জিয়াকে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই কারাবন্দি আছেন।
বিচারিক আদালতের রায়ের পরই হাইকোর্টে আপিলের জন্য রায়ের অনুলিপি পেতে বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়া আবেদন করলে প্রায় ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুলিপির সত্যায়িত কপি দেয় আদালত। ওইদিন বিকেলেই বেগম জিয়ার আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করেন।
এর পর দুই দফায় জামিন আবেদনের শুনানির শেষ দিন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মর্মে রায় দেন যে, বিচারিক আদালতের নথি আসার পর খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশ দেয়া হবে। একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে নথি পাঠাতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, এতিমদের সহায়তায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অনুদানের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই খালেদা-তারেকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক। ২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়। এর পর থেকে গত প্রায় ৯ বছর ধরে চলমান আছে এ মামলার বিচারকাজ।
খালেদা-তারেক ছাড়াও এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অপর চার আসামি হলেন সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, সাবেক সাংসদ ও ব্যবসায়ী কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। এর মধ্যে পলাতক রয়েছেন তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান।