____জেসমিন সুলতানা চৌধুরী____
শিউলি ফুলের মতো
রাতে গন্ধ বিলায়, সকালেই ঝরে পড়ে ।
পথচারী পায়ে মাড়ায়,
পদদলিত হয়ে মাটিতে নুয়ে পড়ে।
দিনশেষে অপেক্ষায় রত থাকে
কখন আকাশে প্রদীপের আলো জ্বলবে,
কখন ভূষণ গায়ে উজ্জ্বল বসনে প্রস্ফুটিত হবে,
কখন সমাজের উঁচু তলা থেকে নিচু তলার
ঘ্রাণ নিতে আসা কীটদের গন্ধ বিলাবে।
কৈশোর, যৌবনের পুরোটা সময় যায় কেটে
অবহেলার নর্দমাক্ত ডাস্টবিনে।
নেই সমাজ, নেই সংসার।
মুখোশের আড়ালে থাকা স্বার্থপরেরা
নিয়ন বাতির আলোয় পিল পিল পায়ে সুবাস নিতে যায় ।
দিনের আলোতে বোল পাল্টায়, ধুর ছাই,
নাম শুনলে নাক ছিটকায়।
অস্পৃশ্য এক দুরারোগ্য ব্যাধি যেন
এক ঘৃণ্য গালির নাম।
দালালের চক্রান্তে যাদের কৈশোরের স্বর্ণালী দিন শুরু হয়
নরকের আগুনে জ্বলে জ্বলে,
বোবা কান্নার আওয়াজ ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হয় চার দেয়ালের অন্তরালে।
ফেলে আসা মুক্ত জীবনে
ফেরার আশায় করে হাঁসফাঁস।
হায়!কি নির্মম পরিহাস,
নিষিদ্ধ পল্লিতেই হয় তাদের স্হায়ী বসবাস!
ঝড়ের কবলে পড়া নীড় হারা পাখির মতো হয় খুব অসহায়,
সর্দারনীর হুকুম,
না চাইলে ও স্বার্থপর, লোলুপ তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের আগুন নেভাতে হয়,
নিজেদের নাম ধাম ভুলে যায় একসময়।
অংশ নয় তারা কারো ভাবনার ,
অংশ নয় তারা এ সমাজ সংসারের,
অন্ধকার পল্লীতে ঠাঁই বলে সবের ঘৃনার দাবীদার।
তারা কোন্ সুদূরের দ্বীপবাসী
আগন্তুক যেন,
চাহিবা মাত্র তবে চাহিদা মেটায় কেন!
ব্যাপ্তি তাদের খুবই ছোট,
যদিও পৃথিবীটা অনেক বড়।
লোক চক্ষুর অন্তরালে তাদের জীবন,
অন্ধকার পল্লীই তাদের স্বর্গ ,তাদের নরক,
তাদের অতি আপন।