Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ১৪ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা মামলা

১৪ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা মামলা

xfull_161840666_1502883894.jpg.pagespeed.ic.ICiaTVMOCx

নিউজ ডেক্স : বাঁশখালীতে ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলা ১৪ বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। এ মামলায় ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে মাত্র ৯ জনের। গত আড়াই বছরে এ মামলায় আর একজন সাক্ষীও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি। অপরদিকে উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশের কারণে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে প্রধান আসামি আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়নি। এ অবস্থায় মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন বাদীসহ নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ-৩ এর আদালতে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলায় বাদী বিমল কান্তি শীল, তার ভাই নির্মল কান্তি শীল, চাচা সুচীন্দ্র শীল, এলাকার পার্শ^বর্তী বাসিন্দা বিজয় ধর, জাবেদ ধর, সাধারণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ, দুলাল চক্রবর্তী, মনমোহনশীল ও দেলোয়ার হোসেন এ ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন দেলোয়ার হোসেন। গত ২৭ জুলাই এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের ওপর তারিখ ধার্য ছিল। ওই দিন সার্জেন্ট জাফরুল ইসলাম, মিনু শীল, হোসনে আরা বেগমের সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে নাম দেয়া হয়। কিন্তু তাদের কেউ সাক্ষ্য দিতে আদালতে না আসায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের বাড়িতে একই পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এতে বাদ যায়নি ৪ দিনের শিশু সন্তান কার্তিক শীলও। এ ঘটনায় বিমল কান্তি শীল বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।

২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি ৩৯ জনকে আসামি এবং ৫৭ জনকে সাক্ষী করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির এএসপি হাচিং প্র“। পরে এক আসামিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়ায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮ জনে।

তারা হলেন- আবদুল করিম ওরফে কালা করিম, জাবেদ হোসেন, আহম্মদ মিয়া ওরফে তোতাইয়া, মাহবুবুর রহমান ওরফে মাহবুব আলী, মো. হাসান ওরফে আর্মি হাসান, সরওয়ার উদ্দিন, মো. শাহজাহান, আবু তৈয়ব, আকবর ওরফে আকবর আলী, শাহজাহান ওরফে দুলা মিয়া, আমিনুল হক, আহম্মদ হোসেন, মতলব, শফিউল আজম, জসিম, নজরুল ইসলাম, আমিনুর রহমান চৌধুরী ওরফে আমিন চেয়ারম্যান, আমিনুল হক ওরফে আমিনিক্যা, আনু মিয়া, সেলিম, বক্কর, রুবেল, আবু, অজি আহম্মদ, আজিজ, আজগর ওরফে রুবেল, জসিম, এনাম, লেদু, কামরুল ইসলাম, আমির হোসেন, ইউনূছ, আবুল কালাম, নূরুন্নবী ওরফে কালাইয়া, মেম্বার রশিদ আহম্মদ, আবদুল নবী এবং চেয়ারম্যান সবুর আহম্মদ।

২০১১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রথম দফা অভিযোগ গঠন করেন আদালত। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশে আমিনুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় অভিযোগ গঠন থেকে বাদ দেয়া হয় তাকে। এরপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ আগের ধারা বাদ দিয়ে নতুন ধারায় অভিযোগ গঠনের জন্য আদালতে আবেদন জানায়। এরপর ১৯ এপ্রিল আমিন চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে ৩৭ জন আসামির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সম্পত্তি দখলের জন্য এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে প্রাথমিকভাবে সিআইডির তদন্তে উঠে আসে।

এদিকে মামলার কার্যক্রম স্থিমিত হয়ে পড়ায় কিছুটা হতাশ চাঞ্চল্যকর এ মামলার বাদী বিমল কান্তি শীল। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘এ মামলায় গত আড়াই বছর ধরে কোনো সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেনি। সাক্ষীদের উপস্থিতি নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনেরও কোনো ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এ মামলার অন্যতম আসামি আমিনুর রহমান চৌধুরীর উচ্চ আদালতে রিট করায় তার বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনায় স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনও হয়নি।

চট্টগ্রাম জেলা পিপি একেএম সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘মামলাটি বর্তমানে সাক্ষী পর্যায়ে আছে। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আগ্রহের কমতি নেই। তবে এ মামলায় এক আসামির মামলা কার্যক্রম পরিচালনার ওপর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে।

-যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!