ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ১৪ দিন পর চলে গেলেন না ফেরার দেশে রক্তিম

১৪ দিন পর চলে গেলেন না ফেরার দেশে রক্তিম

নিউজ ডেক্স : ১৪ দিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা রক্তিম শীলও (২৭) চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আজ মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকা রক্তিম শীল মারা যান। এ নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাটে পিকআপচাপায় একসঙ্গে পাঁচ ভাই নিহতের পর রক্তিমও মারা গেলেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মারা যাওয়া রক্তিমের সম্বন্ধি মিন্টু দত্ত। তিনি মঙ্গলবার সকাল এগারটার দিকে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমার মাসতুতো বোন সুমনা শর্মার স্বামী রক্তিম শীল আজ মঙ্গলবার সকাল দশটার দিকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে মারা গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘কর্তব্যরত চিকিৎসক সকাল দশটার দিকে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন, রক্তিম আর শ্বাস নিচ্ছে না। তিনি মারা গেছেন।’

স্বজন মিন্টু দত্ত বলেন, ‘রক্তিমের মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে। এজন্য হাসপাতালে অবস্থান করছি আমরা। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে আমরা তাঁর (রক্তিম) জ্ঞান ফেরার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু সেই জ্ঞান আর ফেরেনি। পাঁচ ভাইয়ের পর রক্তিমও চলে গেলেন না ফেরার দেশে।’

পরিবার সূত্র জানায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোর পাঁচটার দিকে বাড়ির কাছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে নির্জন স্থানে প্রয়াত বাবা সুরেশ চন্দ্র শীলের পারলৌকিক ক্রিয়ানুষ্ঠানের (শ্রাদ্ধ) আচার হিসেবে ‘দণ্ডি’ দিয়ে বাড়ি ফেরার মুহূর্তে দ্রুতগামী পিকআপ এসে সাত ভাই-বোনকে একসঙ্গে চাপা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলে চার ভাই অনুপম শীল, নিরূপম শীল, চম্পক শীল, দীপক শীল মারা যায়। চমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান আরেক ভাই স্মরণ শীল। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বোন হীরা শীল ও অপর ভাই রক্তিম শীল। তন্মধ্যে হীরা মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রিষ্টান হাসপাতালে এবং রক্তিম চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এর আগে রক্তিমকে প্রাইভেট হাসপাতাল ম্যাক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসাব্যয় বেশি হওয়ায় কয়েকদিনের মাথায় স্থানান্তর করা হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। সেখান থেকে ফের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

ভয়াবহ ও মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় একসঙ্গে ৬ পুত্র সন্তান হারানো বৃদ্ধা মা মৃণালিনী শীল বলেন, ‘আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। আমার রক্তিমও চলে গেল। আমিও হয়তো বাঁচবো না। ঈশ্বর আমাকে এই কঠিণ পরিস্থিতির সম্মুখিন কেন করলো? বলতে বলতেই কাঁদছিলেন মা।

মারা যাওয়া রক্তিম শীলের পাশের থাকা স্ত্রী সুমনা শর্মা বলেন, ‘আমিও শেষ হয়ে গেলাম। ভগবান আমার স্বামীকেও নিয়ে গেলেন। আমার ছোট্ট শিশু ঋদ্ধিও আর তার বাবাকে হারিয়ে ফেলল। এখন আমরা কী নিয়ে বাঁচবো।’ -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!