এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ায় বাড়ি-ভিটে লিখে না দেয়ায় এক বৃদ্ধকে নির্যাতন করছে পরিবারের সদস্যরা। গত এক সপ্তাহ যাবত তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের স্বামী মিলে তাকে শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করছে বলে জানান বৃদ্ধ নুরুন্নবী (৬৫)। উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের পূর্ব তাঁতী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতিত বৃদ্ধ নুরুনবী জানান, এক সময় তিনি সৌদি প্রবাসী ছিলেন। পারিবারিকভাবে বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রী গোল চেহের বেগমের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। গত এক সপ্তাহ যাবত তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী, মেয়ে নাছিমা ও তার স্বামী ফেরদৌস ওরফে খোকন বাড়ি-ভিটে তাদের নামে লিখে দেয়ার জন্য তাকে হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে ঘরে আটকে রাখে। রাজি না হওয়ায় মারধরও করে তারা। এমনকি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার প্রয়োজন হলেও ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার সালিশ-বিচারও হয়েছে। কিন্তু তারা কোন সালিশ-বিচার মানে না। প্রায় ৪ মাস যাবত তারা নানাভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। তাদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
স্থানীয় শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল গফুর তালুকদার জানান, নুরুন্নবী একজন অসহায় মানুষ। তার মেয়ের স্বামী খোকন বাড়ি-ভিটে নিজেদের নামে লিখে দিতে বৃদ্ধ নুরুন্নবীকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। রাজি না হওয়ায় বৃদ্ধ নুরুন্নবীকে কিছুদিন পরপর এভাবে নির্যাতন করছে তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার (২ জুন) রাতে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়েছে। নুরুন্নবীকে নির্যাতন করায় মেয়ের স্বামী খোকনসহ তাদেরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোহাগাড়া শাখার সভাপতি অধ্যাপক হামিদুর রহমান জানান, মধ্যযুগীয় কায়দায় একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষকে এ ধরণের নির্যাতন খুবই দুঃখজনক ও অমানবিক। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
লোহাগাড়া থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ ফেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে, সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয়। ফলে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।