ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | চবিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শনাক্ত ২

চবিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শনাক্ত ২

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির এক সদস্য আজ শুক্রবার(২২ জুলাই) দুপুরে জানান, বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ দিন আগে ছাত্রী নিপীড়নের ওই ঘটনায় পাঁচজন জড়িত ছিল। তাদের দুইজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, “ভুক্তভোগী মেয়েটি আমাদের যে তথ্য দিয়েছিল সেখানে কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকায় তদন্ত করতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ঘটনার সাথে যুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে কাজ চলছে।”

দু’জনকে শনাক্ত করা হলেও এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি জানিয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রুহুল আমিন বলেন, “সংশ্লিষ্টদের ধরতে আমরা বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনাক্তদের একজনের বাসা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকাতেই। দুইজনই শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক সংগঠন সিএফসি’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক গ্রুপগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণাধীন।

প্রসঙ্গত, গত রবিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হতাশার মোড় থেকে হলে ফেরার পথে এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে আটকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে যৌন নিপীড়ন করে পাঁচজন। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার পরদিন সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিতে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের বাধায় তা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর এক বন্ধু। তবে রেজাউল হক রুবেলের দাবি, তিনি ওই ছাত্রীকে অভিযোগ দিতে বাধা নয় বরং সহযোগিতা করেছেন।

ইতিমধ্যে রুবেলকে ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী’ কাজ করায় শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেই নোটিস পেয়ে বুধবার ঢাকায় যান রুবেল। যৌন নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রী মঙ্গলবার থানায় মামলা করেন, তাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। সেদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দেন।

এদিকে, গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে ফেরার নির্দেশনা দেয়। ওই রাতেই হলের ছাত্রীরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ চার দফা দাবি জানায়। দাবি পূরণের আশ্বাসে তারা রাত পৌনে একটায় কর্মসূচি শেষ করে।

এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছেন। তাতে কয়েকজন শিক্ষকও সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার মাঠে নামে ছাত্রলীগের ‍দুই পক্ষও।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে বহু বছর ধরে দু’টি ধারা বিদ্যমান। একটি ধারা প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী, অন্যটি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি রেজাউল হক রুবেল প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিনের এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চত্বরে ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন অনুসারী নেতাকর্মীরা যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুতশাস্তির দাবিতে একটি মানববন্ধন করে। পরে রাতে নাছিরের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও একই দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!