Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | লোহাগাড়ার এক গৃহবধুর মৃত্যু কক্সবাজারে : হত্যা নাকি আত্মহত্যা ?

লোহাগাড়ার এক গৃহবধুর মৃত্যু কক্সবাজারে : হত্যা নাকি আত্মহত্যা ?

41846268_2198340833777452_2038491637318942720_n

নিউজ ডেক্স : লোহাগাড়ার এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে কক্সবাজারে। নিহত গৃহবধু ঋতুপর্ণা চৌধুরীর (২৪) শ্বশুর ও বাপের বাড়ি লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সুখছড়ি গ্রামে। তবে গৃহবধুর শ্বশুর বাড়ির লোকজন কক্সবাজারে অবস্থান করেন। নিহত গৃহবধু আমিরাবাদ সুখছড়ি এলাকার অযোধ্যা পাড়ার অমল দাশের কন্যা ও একই গ্রামের বলরাম সর্দার পাড়ার বর্তমানে কক্সবাজারের শান্তি মেচের মালিকের পুত্র রানা চৌধুরীর স্ত্রী এবং এক সন্তানের জননী।

জানা যায়, কক্সবাজার শহরের লালদিঘী পাড়স্থ বঙ্গবন্ধু সড়কে শান্তি মেচ ভবনের মালিকের পুত্রবধু ঋতুপর্ণা চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঋতুপর্ণার শ্বশুর পক্ষ তাকে মানসিক রোগী আর বাবার বাড়ির পক্ষ সুস্থ বলে দাবি করায় রহস্যের এ জটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ কারণে ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন তারা।

শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রানার পরিবারের লোকজন ঋতুপর্ণাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তৃব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয় বলে দাবি করছেন স্বামী রানার পরিবার। এরপর থেকে মর্গে থাকা মরদেহ শনিবার ময়না তদন্তের পরও সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতাল মর্গেই ছিল।

নিহতের স্বামী রানা চৌধুরীর ছোট ভাই ডা. রিপন চৌধুরী তার বৌদি মানসিক রোগী দাবি করে বলেন, বছর খানেক সময় থেকে বৌদি (ঋতুপর্ণা) মানসিক ডিপ্রেসনে ভোগছিলেন। এ জন্য তাকে চট্টগ্রামে এক সাইকোলজিস্টকে দেখিয়ে কাউন্সিলিংয়ে রাখা হয়। এটা তার বাবার বাড়ির লোকজনও জানেন। এরই মাঝে আরো বেশ কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তিনি (ঋতুপর্ণা)। পরিবারের লোকজনের কারণে সফল হয়ে উঠেনি।

তিনি বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়িতে পুরুষ কেউ না থাকার সুযোগটা বেছে নেন তিনি। মা (ঋতুপর্ণার শ্বাশুড়ি) তার নাতিকে খাবার খাওয়াচ্ছিল এসময় নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বৌদি। মা এটা দেখার পর ভাইকে খবর দিলে তিনি এসে তাকে ফাঁস থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

তবে, নিহত ঋতুপর্ণার ভাই শুভ জানান, তার বোন কখনো মানসিক রোগী ছিলেন না। তারা যে কাউন্সিলিংয়ের কথা বলছেন তাও তাদের জানানো হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছি। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকেও তার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলেছেন বোন ঋতুপর্ণা। এর ঘন্টাখানেক পর আবার ফোনে জানানো হয় ঋতুপর্ণা আত্মহত্যা করেছে।

ফাঁসি খেয়ে থাকলে বাড়ির একশ গজ দুরত্বে থানায় খবর দেয়া হয়নি কেন এমন প্রশ্ন রেখে শুভ আরো বলেন, এটি সন্দেহজনক। তাই ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব। এর উপর ভিত্তি করেই তিনি মামলার আশ্রয় নিবেন বলে উল্লেখ করেন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, শুক্রবার রাতে খবর পায় জেলা সদর হাসপাতালে লালদিঘীর পাড় এলাকার এক নারীর মরদেহ রয়েছে। পুলিশ গিয়ে মরদেহটি আয়ত্বে নেয়। এরপর থেকে বিনা ময়না তদন্তে মরদেহ দিয়ে দিতে নানা জায়গা থেকে তদবির আসে।

তিনি বলেন, এঘটনা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় শনিবার বিকেলে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। তার রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত এটি হত্যা না আত্মহত্যা কিছুই বলা যাচ্ছে না।

ওসি আরো বলেন, ফাঁসি খেয়ে থাকলে পুলিশ না ডেকে নিজেদের মতো করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আইন সম্মত হয়নি। শনিবার রাতে মরদেহটি মেয়ের পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!