কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া : উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যূষিত ভারে ন্যুয়ে পড়া জনপদ পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী খালের ভাদিতলা ব্রীজ নির্মাণের ফলে পাল্টে দিতে পারে ৪ গ্রামের ৫হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা। পালংখালীর অবহেলিত ৪নং ওয়ার্ড থাইংখালী তাজনিমারখোলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের অসংখ্য মানুষ একটি ব্রীজের কারণে আর্থি, মানষিক ও সামাজিক ভাবে অসম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসছিল যুগ যুগ ধরে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের বদান্যতায় এই ব্রীজটি নির্মাণের ফলে অত্র ওয়ার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সার্বিক চিত্রের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বলে দাবী করছেন এলাকাবাসি।
সরজমিন পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী ৪নং ওয়ার্ডের তাজনিমারখোলা, গৌজঘোনা, ঘোনারপাড়া, পশ্চিম থাইংখালী,ছোরাখোলা এলাকা ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা জানা গেছে, এ ওয়ার্ডের হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেড় লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। তাছাড়া এখানে রয়েছে তাজনিমারখোলা ক্যাম্পে পাশে^ বার্মাইয়াপাড়া নামের একটি রোহিঙ্গা বসতি। স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল উদ্দিনের আর্ন্তরিকতার ও দিনরাত পরিশ্রমের কারনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এখানে অনৈতিক কর্মকান্ড সহ মাদকদ্রব্য, চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসী ও টাউট,ভাটপারদের কোন রকম বিচরণ নেই বললেই চলে। যে কারনে এখানকার মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে সক্ষম হচ্ছে। তাজনিমারখোলা গ্রামের আব্দু সালাম (৪৫) পশ্চিম থাইংখালী গ্রামের আব্দু রশিদ (৪০) ছোরাখোলা গ্রামের শফিকুর রহমান (৫০) ঘোনারপাড়া গ্রামের খাইরুল বশর (৫৩) গৌজঘোনার হাজী নুরুল হক (৪৮) সহ বেশ কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, পালংখালী ইউনিয়নের ৯জন ইউপি সদস্যের মধ্যে ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নাল উদ্দিন তার ওয়ার্ডে উন্নয়ন কাজ করে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে জানিয়ে বলেন, অত্র ওয়ার্ডের ৩৩৭ হতদরিদ্র পরিবারের একেক জন সদস্য ২হাজার টাকা ডাব্লিউএফপি থেকে অনুদান পাচ্ছেন। এনজিও সংস্থা মুক্তি থেকে ৮ হাজার টাকা করে অনুদান পাচ্ছেন ৩০৬ পরিবার। যেসব পরিবারের নুন আনতে পান্তা পুরায়। গ্রামবাসি আরো জানান, তাজনিমারখোলা গ্রামের ২ কিলোমিটার ব্রিক সলিন, ১ কিলোমিটার কার্পেটিংসহ অসংখ্য গ্রামীন সড়ক নির্মাণ করে গ্রামীন জনপদের যোগাযোগ ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন এনেছে। এছাড়া প্রায় সহ¯্রাধিক পরিবারের মধ্যে খাবার পানি নিশ্চিত করণের জন্য বিভিন্ন এনজিও সংস্থা থেকে উক্ত ইউপি সদস্য টিউবওয়েল বরাদ্দ এনে পানি ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছে। তারা বলেন, এখানে প্রায় ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক বসবাসের পরেও স্থানীয় স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে সক্ষম হচ্ছে। বিশেষ করে থাইংখালী খালের উপর ভাদিতলা ব্রীজ নির্মাণের ফলে খালের এপার ওপারের বসবাসরত প্রায় ৫ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি তাদের অর্জিত অর্থকরি ফসল বাজারজাত করে স্বাবলম্বি হওয়ার অপূরন্ত সম্ভাবনা রয়েছে।

এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জনপ্রতিনিধিরা ইচ্ছা করলে একটি এলাকাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আবার সদিচ্ছা থাকলে একটি অতর্ব এলাকাকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিতে পারে। এটি প্রমান করেছে পালংখালী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, তাজনিমারখোলা, ময়নাঘোনা ও বার্মাইয়া পাড়ায় প্রায় ২লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করার পরও সেখানে এ পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পবিত্র চন্দ্র মন্ডল জানান, ৪৪ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দে থাইংখালী খালের উপর ভাদিতলা ব্রীজ নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।