ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ৯ দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে

৯ দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট চলছে

148555_1

নিউজ ডেক্স : বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ৯ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে এই কর্মবিরতি চলছে।

আজ সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাকগুলো জড়ো হয়ে আছে। কোনও ট্রাক সেখান থেকে ছেড়ে যায়নি। শ্রমিকরাও কাজে যোগ দেয়নি। তবে তারা বিভিন্ন স্থান থেকে টার্মিনালে আসতে শুরু করেছে।

সংগঠনটির আহ্বায়ক রুস্তম আলি খান জানান, ‘সকাল ৬টা থেকে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলছে। কোনও ট্রাক কোথাও পণ্য নিয়ে যায়নি।’

এদিকে তেজগাঁওয়ে ট্রাক চালানোর সময় এক চালককে মারধর করে কর্মবিরতি পালনকারী শ্রমিকরা। ট্রাকটি পানি সরবরাহের কাজে নিয়োজিত ছিল। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

নতুন সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন শুরুর পর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাস চলাচল বন্ধের পর সারাদেশে ট্রাক চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। তারা নতুন সড়ক পরিবহন আইন স্থগিত করে সংশোধনের জন্য ৯ দফা দাবি উপস্থাপন করে।
দাবিগুলো হলো−

১) সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ স্থগিত করে মালিক-শ্রমিকদের আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জরিমানার বিধান ও দণ্ড উল্লেখপূর্বক সংশোধন করে একটি যুগোপযোগী বাস্তবসম্মত ও বিজ্ঞানভিত্তিক সঠিক আইন প্রণয়ন করতে হবে।

২) বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা কমিটি, সড়ক পরিবহন আইনশৃঙ্খলা কমিটি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত যেকোনও পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট কমিটিতে প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৩) সড়ক দুর্ঘটনায় চালককে এককভাবে দায়ী করা যাবে না। সড়ক দুর্ঘটনাজনিত কোনও মামলায় চালক আসামি হলে তা অবশ্যই জামিনযোগ্য ধারায় হতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষ কী, তা মালিক-শ্রমিক প্রতিনিধিদের সংযুক্ত করে তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় কোনও গাড়ির মালিককে গ্রেফতার বা হয়রানি করা যাবে না।

৪) বিআরটিএ কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত নভেম্বর-২০১৯ এর আগ পর্যন্ত যেসব পণ্য পরিবহন গাড়ি রফতানিযোগ্য পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা নির্ধারণ অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে সেসব গাড়ির মডেল থাকাকালীন অবস্থায় চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।

৫) সড়ক-মহাসড়ক ও হাইওয়েতে গাড়ির কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। সব জেলা টার্মিনাল ও ট্রাকস্ট্যান্ড অথবা লোডিং পয়েন্টে গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং করতে হবে। বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে অযথা বিভিন্ন অনুপাতে পুলিশ কর্তৃক মামলা করা যাবে না।

৬) সহজ শর্তে স্বল্প সময়ের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে। যেসব চালক যে সমস্ত গাড়ি চালনায় পারদর্শী সেসব চালককে সে রকম লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। বর্তমানে হালকা পেশাদার লাইসেন্স দিয়ে ভারী যানবাহন চালানোর অনুমতি দিতে হবে। জরিমানা মওকুফ করে গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ করার ন্যূনতম ৬ মাস সময় দিতে হবে। বিগত পণ্য পরিবহন আন্দোলনে ও ধর্মঘটে যেসব মালিক শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

৭) সব জেলা শহর ও হাইওয়ে মহাসড়কের পাশে, সিটি করপোরেশনের, পৌরসভার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক স্থানে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধাসহ টার্মিনাল বা স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। টার্মিনাল নির্মাণের আগে ‘রং’ পার্কিংয়ের মামলা দেওয়া বা গাড়ি রেকারিং করা যাবে না।

৮) সমগ্র বাংলাদেশে এক নিয়মে একই ওজনে ওভারলোডিং নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মোটরযানের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী একটি বাস্তবসম্মত বোঝাইকৃত ওজনের হার নির্দিষ্ট করে ওভারলোডিং সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।

৯) সড়ক-মহাসড়কে ৩০ মিটারের মধ্যে কোনও স্থাপনা থাকা যাবে না। প্রতি ১০০ কিলোমিটার পর পর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বিশ্রামাগারসহ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফুটপাত, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস, জেব্রাক্রসিং ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ধীরগতির যানবাহন চলাচলের জন্য ভিন্ন লেন বা রাস্তা তৈরি করতে হবে। নসিমন, করিমন ও ভটভটিসহ সব রেজিস্ট্রেশনবিহীন যান হাইওয়েতে চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!