ব্রেকিং নিউজ
Home | লোহাগাড়ার সংবাদ | লোহাগাড়ায় যত্রতত্র ইটভাটা : গ্রাস করছে কৃষিজমি

লোহাগাড়ায় যত্রতত্র ইটভাটা : গ্রাস করছে কৃষিজমি

241

এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়া উপজেলার ৯ ইউনিয়নে যত্রতত্র ইটভাটা গড়ে উঠেছে। উঠছে। ইটভাটা গ্রাস করছে কৃষিজমি। ইটভাটার কাঁচামাল যোগান দিতে পাহাড় ও টিলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ রয়েছে, দুই বা তিন ফসলি কৃষিজমিতে ইটভাটা কোনোভাবেই গড়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু এই নির্দেশ মানছে না লোহাগাড়ার ইটভাটার মালিকরা।

কৃষকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ভাটার আশপাশের জমিতে ধান কম উৎপাদন হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন দাবি করছে, তারা অভিযান চালিয়ে ইটভাটার জরিমানা করলেও সেগুলো আবার আগের মতোই চলছে।

কৃষকদের বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে ইটভাটাটি সরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়ে কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, নাইলে একসময় এসব জমিতে কৃষক আর ফসল ফলাতে পারবেন না।

চরম্বা ইউনিয়নে এলবিএম ভাটার কারণে সেখানকার ফসলী জমি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।  ইটভাটার কারণে এমন ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হলেও দুই-তিন ফসলি কৃষিজমিতে অবৈধ ইটভাটাগুলো কীভাবে চলছে এমন প্রশ্ন তুলছেন কৃষক ও সচেতন মহল।

ট্রেড লাইসেন্স, বিএসটিআই সনদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও জেলা প্রশাসক প্রদত্ত লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ইটভাটা স্থাপন করার আইন থাকলেও এগুলো লঙ্ঘন করা হচ্ছে। ইটভাটাগুলোর মধ্যে কয়েকটিতে সামান্য কয়লা ব্যবহৃত হলেও সনাতন বা ফিক্সড পদ্ধতির ইটভাটাগুলোর সব কটিতেই কয়লার পরিবর্তে কাঁচা কাঠ ও গাছের গুঁড়ি পোড়ানো হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার ইটভাটাগুলোতে প্রতি মৌসুমে ২৫-৩০ লাখ মণ কাঠ পোঁড়ানো হচ্ছে। আর এসব কাঠের জোগান দিতে উজাড় করা হচ্ছে জেলার গাছপালা।

গত ২৮ এপ্রিল লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুব আলম চরম্বা নোয়ারবিলা এলাকার শাহ আলমের মালিকানাধীন নির্মাণাধীন এক ইটভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে নির্মাণাধীন এ ইটভাটায় রক্ষিত ২ লক্ষ পিচ ইট জব্ধ ও মোঃ জামাল হোসেন নামে একজনকে আটক করে ১০ দিনের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পরিচালিত ইটভাটাগুলোতে অভিযান অব্যাহত রাখার দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী ইটভাটায় ১২০ ফুট উঁচু চিমনি স্থাপন বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (৪ ধারার ৫ উপধারা) অনুযায়ী আবাসিক এলাকা, উপজেলা সদর ও ফলবাগানের আশপাশের ৩ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ অবৈধ। কিন্তু এখানে ঘনবসতি ও তিনফসলি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এতে ইটভাটার নির্গত ধোঁয়া অতি সহজেই লোকালয় ও ক্ষেত-খামারে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে বিপর্যস্ত হচ্ছে পরিবেশ। দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে জনজীবন।

লোহাগাড়া উপজেলায় উদ্বেগজনক হারে ইটভাটা বাড়ার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে আবাদি জমি। ফলে খাদ্য এ উপজেলায় ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি দেখা দেওয়ার অশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!