মারুফ খান : লোহাগাড়ায় ২০১৯ সালে দোকান-গোয়ালঘরসহ ৩৫ বসতবাড়ি আগুনে পুড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুরো বছরের সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়।
৮ ফেব্রুয়ারী চুনতি মুন্সেফ বাজারের পূর্বে পার্শ্বে বড়ুয়া পাড়ায় অগ্নিকান্ডে ৬ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন সুধীর বড়ুয়া, রনধীর বড়ুয়া, মিলন বড়ুয়া, স্বপন বড়ুয়া, রূপন বড়ুয়া ও দীপন বড়ুয়া। ১১ ফেব্রুয়ারী চরম্বা ইউনিয়নের উত্তর চরম্বা সুফিয়াবাদ কাজির পাড়ায় অগ্নিকান্ডে ৩ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন কালু ড্রাইভার, বদিউল আলম ও রিক্সাচালক মোহাম্মদ মিয়া। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ৫ লাখ টাকা।
১ মার্চ বড়হাতিয়া ইউনিয়নের হরিদাঘোনা এলাকায় অদৃশ্যশক্তির (জ্বীন) দেয়া আগুনে পুড়েছে ৩ পরিবারের বসতঘর। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন আবদুল করিম, নুরুল আলম ও আবদুল আলিম। ১০ মার্চ লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের দরবেশহাট মওলা পাড়ায় আবুল হাশেমের গোয়ালঘরে আগুনে ১টি গাভি ও ১টি বাচুর পুড়ে অঙ্গার হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ১৫ মার্চ আমিরাবাদ ইউনিয়নের বণিক পাড়ায় আগুনে ৩ বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন মতি লাল ধর, সঞ্জিব ধর ও শিবু কুমার ধর। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ১৫ লাখ টাকা। ৩১ মার্চ কলাউজান ইউনিয়নের উত্তর কলাউজান আলী আহমদ সিকদার পাড়ায় প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেনের বসতঘর ও সংলগ্ন দোকান পুড়ে ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
১০ এপ্রিল বড়হাতিয়া উপজেলার কুমিরাঘোনা আফিয়ার বাপের পাড়ায় আগুনে বেলাল উদ্দিন মেস্ত্রীর বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ২৫ এপ্রিল লোহাগাড়া সদরের দরবেশহাট রোডস্থ কাজির পুকুর পাড়ে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে মোঃ এনামের মালিকাধীন সাঈদী এন্টারপ্রাইজের জেনারেটর, আবদুল হাকিমের মালিকাধীন বিছমিল্লাহ চাউল ভান্ডার ও খাইরুল ইসলামের মালিকানাধীন শষ্যধানা মাড়াই যন্ত্র (কলঘর) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ৮০ লাখ টাকা।
৯ মে বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দূল্লর্ভের পাড়ায় কৃষক আবদুল কুদ্দুসের বসতঘর ও গোয়ালঘর আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ৫ লাখ টাকা।
৩০ জুন পুটিবিলা ইউনিয়নের নাথ পাড়ায় আগুনে সুজন কান্তি নাথের এক সেমিপাকা দোকান পুড়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তের দাবী ক্ষয়ক্ষতি দেড় লাখ টাকা।
৩ জুলাই পদুয়া ইউনিয়নের জঙ্গল পদুয়া ইছার বর বাড়ি এলাকায় আগুনে ৫ পরিবারের বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন মোঃ দেলোয়ার, শাহাদাত হোসেন, রবিউল ইসলাম, নাছির উদ্দিন ও মাওলানা আবুল ফয়েজ। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী ক্ষয়ক্ষতি অর্ধকোটি টাকা।
১৮ আগষ্ট বতটলী মোটর ষ্টেশনের দরবেশহাট ডিসি সড়কে মোঃ কামরুল ইসলামের মালিকানাধী আল মদিনা মেট্রেস নামে এক লেপ- তোষকের কারখানায় অগ্নিকান্ডে ৮ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
৬ ডিসেম্বর কলাউজান ইউনিয়নের উত্তর কলাউজান হিন্দুরহাট সেন পাড়ায় অগ্নিকান্ডে ৩ বতঘর ও এক গোয়ালঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন তাপস দাশ, লাতু দাশ, শঙ্কর সেন ও শ্যামল দাশ। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবী ক্ষয়ক্ষতি ৫ লাখ টাকা।
সচেতন মহল মনে করছেন, আগুন লাগার মূল কারণ অসাবধানতা। অসাবধানতার সঙ্গে যোগ হয় অজ্ঞতা। আগুন লাগার বড় ধরনের উৎসগুলো হচ্ছে জ্বলন্ত চুলা, জ্বলন্ত সিগারেট, জ্বলন্ত ম্যাচের কাঠি, খোলা বাতি, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট, গরম ময়লা, আবর্জনা ও অন্যান্য দাহ্য বস্তু, ছেলেমেয়েদের আগুন নিয়ে খেলা বা রাসায়নিক বিক্রিয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া মেশিনারিজ, আবর্জনায় গ্যাস সৃষ্টি হয়ে, মেশিনের ঘর্ষণ, বজ্রপাত, গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন ধরণের বিস্ফোরণ থেকেও আগুন লেগে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।