ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে বৃদ্ধকে তরুণে পরিণত করার ওষুধ আবিষ্কার

বয়সের ছাপ ঠেকিয়ে বৃদ্ধকে তরুণে পরিণত করার ওষুধ আবিষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মানুষের শরীরে বয়সের ছাপকে বিপরীতমুখী করে তরুণে পরিণত করতে পারে— এমন একটি ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। গবেষকরা এই ওষুধটিকে ‘ফাউন্টেন অব ইয়ুথ’ আখ্যা দিয়েছেন; যা সেবনের ফলে বয়স্ক মানুষকে একেবারে তরুণদের মতো দেখা যাবে।

গত ১২ জুলাই বয়সবিষয়ক এজিং জার্নালে ‘কেমিক্যালি ইনডিউসড রিপ্রোগ্রামিং টু রিভার্স সেলুলার এজিং’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই গবেষণার ফল নিয়ে চলতি সপ্তাহে একাধিক টুইট করেছেন হার্ভার্ডের গবেষক ডেভিড সিনক্লেয়ার।

টুইটারের ১৭টি থ্রেডে গবেষণায় পাওয়া ফলের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। যা এখন পর্যন্ত এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১০ লাখের বেশি মানুষ দেখেছেন। গবেষক ডেভিড সিনক্লেয়ার বলেছেন, আমরা পূর্বে দেখিয়েছি যে, ভ্রূণের জিন চালু করতে জিন থেরাপি ব্যবহার করে বয়সের পরিবর্তন করা সম্ভব।

হার্ভার্ডের এই গবেষকরা ছয়টি ‘রাসায়নিক ককটেল’ আবিষ্কার করেছেন। যা গত কয়েক বছর ধরে মানুষ ও ইঁদুরের ত্বকের কোষকে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে সতেজ করে তুলেছে। গবেষক ডেভিড বলেন, এখন আমরা দেখিয়েছি যে, সেটি রাসায়নিক ককটেল দিয়ে করা সম্ভব। সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের শরীরের পুনর্জীবন লাভের আরেকটি পদক্ষেপ এটি।

প্রত্যেকটি ‘রাসায়নিক ককটেলে’ পাঁচ থেকে সাতটি এজেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো এজেন্ট মানুষের অন্যান্য শারীরিক এবং মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্য পরিচিত।

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, প্রেসক্রিপশনের কিছু ওষুধ যেমন— ভ্যালপ্রোইক অ্যাসিড, ট্রানাইলসিপ্রোমিন এবং প্রামিপেক্সোল বেশ কয়েকটি ককটেলে পাওয়া যায়। আর এসব ওষুধ যথাক্রমে মানুষের খিঁচুনি, বিষণ্নতা এবং পারকিনসন্সের চিকিৎসার জন্য সফলভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।

মানুষের দীর্ঘায়ু ও জিনতত্ত্ব নিয়ে ২০১৯ সালে ‘লাইফস্প্যান’ নামের একটি বই লিখে তুমুল সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন জেনেটিক্সের এই অধ্যাপক।

গবেষক দলের আবিষ্কারের বিষয়ে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলে তিনি ও তার দল তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন সব অণু খুঁজে বের করার জন্য কাজ করেছেন; যা বার্ধক্যকে বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে দেয় এবং মানুষের শরীরের কোষকে পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে পারে।

ডেভিড সিনক্লেয়ার বলেন, ইঁদুর ও বানরের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তারা ছয়টি ‘রাসায়নিক ককটেল’ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। যেগুলো এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বার্ধক্যের লক্ষণগুলোকে ‘বিপরীত’ করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘অপটিক স্নায়ু, মস্তিষ্কের টিস্যু, কিডনি এবং পেশীর ওপর অধ্যয়নগুলো ইঁদুরের উন্নত দৃষ্টি এবং বর্ধিত জীবনকালের ব্যাপারে আশাব্যঞ্জক ফল দেখিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিলে বানরদের দৃষ্টিশক্তিও উন্নত হয়েছে।

তবে হার্ভার্ডের একজন অধ্যাপকসহ অন্যান্য বিজ্ঞানীরা গবেষণাটিতে অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। তারা বলেছেন, এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট, এনডিটিভি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!