Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বঙ্গবন্ধু টানেলের দক্ষিণ টিউব উদ্বোধন

বঙ্গবন্ধু টানেলের দক্ষিণ টিউব উদ্বোধন

নিউজ ডেক্স : কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্তকাজ সমাপ্তি উদযাপন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (শনিবার) প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় তিনি বলেন, এ দেশ আর দারিদ্র্য থাকবে না। এখন আর কাউকে খাবারের জন্য হাহাকার করতে হয় না বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘এখন বিদেশিদের কাছে হাত পেতে নয়, মাথা উঁচু করে চলবে বাংলাদেশ।’ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হলে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে।’

করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশও এর থেকে দূরে নয়। তাই আমাদের জমি ও জলাশয়গুলো যেন খালি না থাকে। যা-ই খালি আছে, সব জায়গা থেকেই উৎপাদন করতে হবে। আমাদের যা আছে তা নিয়েই চলতে হবে। কারও কাছে হাত পাতব না।’

এ সময় ফের করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে আয়োজিত সুধী সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল আলম চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সরকারের সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেলটি বাংলাদেশের গর্ব, মর্যাদা এবং একটি মেগা কাঠামো সম্পন্ন করার সক্ষমতার প্রতিফলন ঘটাবে।

তিনি বলেন, টানেলের কারণে সড়ক নেটওয়ার্কে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কক্সবাজার, বাঁশখালী ও মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং কর্ণফুলী টানেল দিয়ে আনোয়ারা ক্রসিং হয়ে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে ।

সেতু বিভাগের সচিব আরো বলেন, এতে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি চাকায় গতি সঞ্চারিত হবে এবং জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থান বাড়বে। দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির উন্নয়নে এই টানেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, টানেলের ভেতরের বেশিরভাগ কাজ শেষ হয়েছে এবং শুধু বৈদ্যুতিক লাইন ও কিছু কারিগরি কাজ বাকি আছে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা প্রতিদিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দ্রুত কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যৌথভাবে কর্ণফুলী টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন এবং ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন।

টানেলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি প্রান্ত থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং আনোয়ারায় কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড কারখানার মধ্যে নদীর তলদেশে সংযোগ স্থাপন করছে।

মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিমি এবং এতে দুটি টিউব রয়েছে। প্রতিটিতে দুটি লেন রয়েছে। এই দুটি টিউব তিনটি জংশনের (ক্রস প্যাসেজ) মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। এই ক্রস প্যাসেজগুলি জরুরি পরিস্থিতিতে অন্যান্য টিউবগুলিতে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিমি এবং ভেতরের ব্যাস ১০.৮০ মিটার।

মূল টানেলের পশ্চিম এবং পূর্ব দিকে একটি ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে টানেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির মোট ব্যয় প্রায় ১০ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা।

চীনের এক্সিম ব্যাংক ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বাকি অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। আগামী জানুয়ারিতে টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। টানেলের আর মাত্র ৬ শতাংশ কাজ বাকি বলেও সংশ্লিষ্টরা জানান। -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!