ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ফেরার পরিবেশ দেখতে রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিদর্শন টিম

ফেরার পরিবেশ দেখতে রাখাইনে রোহিঙ্গা পরিদর্শন টিম

নিউজ ডেক্স : অনেক দেন দরবার, প্রস্তুতি, মিয়ানমার টিমের বাংলাদেশে এসে সাক্ষাৎ, চীনের মধ্যস্হতায় একের পর এক বৈঠক, কিন্তু কথিত পাইলট প্রকল্পের আওতায় এপ্রিলেও কোনো রোহিঙ্গা ফেরত নিতে পারেনি মিয়ানমার।মাস দুয়েক ধরে বেশ জোরে শোনা যাচ্ছিল গত এপ্রিলের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেয়া কার্যক্রম শুরু করবে মিয়ানমার। কিন্তু এ ধরনের তেমন কিছুই ঘটেনি।

রাখাইন পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের জন্য কতটা অনুকূল তা দেখতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ২০ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদল আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাখাইনের মংডুতে গেছেন। এ মাসে প্রথম ধাপে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিনিধিদলটি রাখাইনে গেছে। কূটনৈতিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের প্রায় ছয় বছরের মাথায় মিয়ানমার এই প্রথমবারের মতো তাদের সংখ্যালঘু মুসলমান সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধিদলকে রাখাইনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল কুনমিংয়ে চীনের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত এপ্রিলের ২৫-২৬ তারিখ প্রত্যাবাসন শুরুর পরিবেশ কতটা অনুকূল তা দেখতে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের নিয়ে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদে রাখাইন যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু ঐ সময়ে যাওয়া হয়নি।

অবশেষে আজ শুক্রবার পরিদর্শন টিম রাখাইনে গিয়েছে যদিও বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট কেউ এ ব্যাপারে কিছু বলছেন না।

ওই সফরের এক সপ্তাহের মধ্যে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলবে। সব ঠিকঠাক এগোলে চলতি মে মাসে ১ হাজার ১৭৬ জন রোহিঙ্গার প্রথম দলটি নিয়ে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় চীন ও মিয়ানমার। প্রথম দলে ৭ শতাধিক মুসলমান ও ৪ শয়ের মতো হিন্দু অন্তর্ভুক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ১০ লক্ষ আশ্রিত রোহিঙ্গার মধ্যে ৬ বছর পর ১১ রোহিঙ্গা ফেরত গ্রহণ কতটুকু মানবিক তা নিয়ে অনেকে কৌতুহলী

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢলের পর প্রায় ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও দুই দফা তারিখ চূড়ান্ত করে প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। বিশেষ করে রাখাইনে প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ এবং মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাবের কারণে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে রাজি করানো যায়নি।

জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের জালিয়াপাড়া ঘাট দিয়ে একটা কান্ট্রি বোটে করে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমার চলে গেছে। ইতিমধ্যে প্রতিনিধি দলটি রাখাইনের মংডু ট্রানজিট ঘাটে পৌঁছে গেছে।

রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলকে সহায়তা প্রদান করতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত শরণার্থী কমিশনার খালিদ হোসেনসহ বাংলাদেশী ৭ জন কর্মকর্তাও সঙ্গে রয়েছেন। আজ সন্ধ্যার দিকে তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।

প্রতিনিধি দলের সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপ-সচিব) খালিদ হোসেন বলেন, তিন নারীসহ রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল নিয়ে আমরা রাখাইনের মংডুতে ৯টার পর রওনা হয়েছি। বিকেলে ফেরার কথা রয়েছে। সেই দেশে প্রত্যাবাসন অনুকূল পরিবেশ দেখতে এই যাত্রা।

এমন একটা সময়ে মিয়ানমার হঠাৎ করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাইছে যখন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) দেশটির বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় পাল্টা যুক্তি উপস্থাপনের সময়সীমা নির্ধারণ করা আছে।

আগামী ২৪ মে আইসিজেতে মিয়ানমারের বক্তব্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে। বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধি আবদুল মুহিত রোহিঙ্গা সমস্যা থেকে আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত এ সমস্যার টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো আন্তরিক ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গা ঢলের মাত্র তিন মাসের মাথায় অনেকটা চীনের চাপে মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছিল। ওই সময় একাধিকবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সফর করেছিলেন চীনের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। নেপথ্যে চীন থাকলেও তখন বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয়ভাবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সমঝোতা স্মারক সইয়ের সময় ওয়াং ই নেপিডোতে অবস্থান করছিলেন। -আজাদী অনলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!