ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | পাংশার ৫ কেজির ‘বরফ খণ্ড’ নিয়ে কানাডার গবেষকের মন্তব্য

পাংশার ৫ কেজির ‘বরফ খণ্ড’ নিয়ে কানাডার গবেষকের মন্তব্য

নিউজ ডেক্স :  রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদের পাশে চান্দুর মোড় এলাকায় বৃষ্টির সময় পাওয়া বড় এক খণ্ড শিলা (বরফ খণ্ড) নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে দাবি করা হচ্ছে ৫ কেজি ওজনের শিলা পড়েছে আকাশ থেকে!

এ নিয়ে নিজের একটি ব্যাখ্যা ও মত প্রদান করেছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক এবং আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।

তার ফেসবুকে পোস্ট করা স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

ঘুমাইয়া ছিলাম, ছিলাম ভালো। উঠে দেখি ৫ কেজি শিলার সংবাদে (ভুয়া) আমার ম্যাসেজ বক্সের ওজন হয়ে গেছে, ‘সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন’ বিজ্ঞাপনের মতো।

আপনাদের নিশ্চিত করতে চাই যে জনৈক ব্যক্তির হাতে যে বরফ খণ্ড দেখতেছি সেটি কালবৈশখী ঝড় থেকে সৃষ্ট কোনো শিলা নয়। শিলাবৃষ্টির কোনো বৈশিষ্ট্য এই বরফ খণ্ডে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় শিলাবৃষ্টি পড়ার কোনো নজির নেই। যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় শিলা গঠিত হয় সেই প্রক্রিয়ায়ও এত বড় শিলা বাতাসে ভেসে থাকা সম্ভব নয়। তাহলে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন এই শিলা এলো কোথা থেকে? সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উত্তর হলো যদি প্রকৃত অর্থেই এই শিলা আকাশ থেকে পড়ে থাকে তবে এই শিলা পড়েছে ঝড়ের সময় ওই স্থানের আকাশ দিয়ে চলমান কোনো বিমান থেকে। বিমান থেকে এই ধরনের বরফ খণ্ড পড়ার ঘটনা খুবই সাধারণ।

স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য

এদিকে এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, এটা আসলে শিলা কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি আমি শোনার পর আমাদের কয়েকজনকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ততক্ষণে শিলাটি আমরা পাইনি। তাই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না যে ঘটনা সত্য কি না। যদিও শিলার আকার গোলাকৃতির হয় কিন্তু আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের ভাইরাল হওয়া ছবিতে গোলাকৃতি পাইনি। তবে স্থানীয়রা ও আশেপাশের দোকানদাররা দাবি করছেন শিলাটি আকাশ থেকেই পড়েছে। এছাড়া পাংশা শহরে শনিবার বিকেলে খুব বেশি শিলাবৃষ্টি হয়নি। আমার ধারণা কেউ হয়তো রাস্তার পাশে বরফ খণ্ড ফেলে রেখেছে, সেটি ভাইরাল হয়েছে।

কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, শিলাখণ্ড ৫ কেজি হয়ে পড়বে এটি বাস্তব সম্মত নয়। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আমরা পাইনি। আবার কোথাও এমন বড় আকৃতির শিলা পড়েছে বলে রেকর্ড নেই। এখন ফেসবুকের সব কথায় বিশ্বাস করা ঠিক নয়।

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেলে পাংশা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়। শুধু পাংশা উপজেলা শহর এলাকায় বৃষ্টিপাতের সঙ্গে শিলা পড়ে। বৃষ্টিপাত শেষ হবার পর পাংশা উপজেলা পরিষদ চত্বরের পাশে চান্দুর মোড়ে হালিমের চা দোকানের পাশে এক খণ্ড শিলা পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা দাবি করেন, বৃষ্টির সঙ্গে শিলাখণ্ডটি আকাশ থেকে পড়েছে। সেটি সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!