ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | ধোঁয়াবিহীন প্ল্যান্টে পুড়বে মেডিকেল বর্জ্য

ধোঁয়াবিহীন প্ল্যান্টে পুড়বে মেডিকেল বর্জ্য

নিউজ ডেক্স : মেডিকেল বর্জ্য বিশোধনে চট্টগ্রামে প্রথম ‘ইন্সিনারেটর প্ল্যান্ট’ স্থাপন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। নগরের ১৬৩টি সরকারি-বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান (হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার) থেকে সংগৃহীত দৈনিক দেড় টন মেডিকেল বর্জ্য প্ল্যান্টটিতে পোড়ানো হবে। তবে এতে কোনো ধোঁয়া হবে না। বর্তমানে সংগৃহীত মেডিকেল বর্জ্যের বেশিরভাগই সাধারণ বর্জ্যের সাথে মিশে যায়। এছাড়া তা পোড়ানো হয় খোলাভাবে। যা পরিবেশের উপর মারাত্মক বিরুপ প্রভাব ফেলছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্ল্যান্টটিতে মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো হবে পরিবেশসম্মত উপায়ে। এতে একদিকে পরিবেশ দূষণ রোধ হবে। অপরদিকে সংগৃহীত মেডিকেল বর্জ্যের কারণে যে সংক্রামক রোগ ছড়ায় তাও বন্ধ হবে।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরের মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে শৃঙ্খলায় আনয়নে প্রায় তিন কোটি টাকা দামের আধুনিক ও ধোঁয়াবিহীন মেডিকেল বর্জ্য ইন্সিনারেটর প্ল্যান্টটি চসিককে অনুদান হিসেবে দিয়েছে জাইকা। কয়েকদিন আগে নগরের হালিশহর আনন্দবাজারস্থ চসিকের আবর্জনাগারে প্ল্যান্টটি স্থাপন করা হয়। মাত্র এক হাজার ৩৭৫ বর্গফুট জায়গায় স্থাপিত প্ল্যান্টটির দৈনিক ধারণ ক্ষমতা ৪ দশমিক ৮ টন। আজ সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর প্ল্যান্টটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

জাইকার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প দলের জাতীয় উপদল নেতা প্রকৌশলী গোলাম সরওয়ার বলেন, স্থাপিত ইন্সিনারেটরে পরিবেশসম্মত উপায়ে ধোঁয়াবিহীন চুল্লির মাধ্যমে মেডিকেলের যে সংক্রামক বর্জ্য আছে তা ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্লাস তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা হবে। সেই ছাইগুলোও মাটি চাপা দেয়া হবে।

চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক বলেন, এতদিন মেডিকেল বর্জ্য পোড়ানো হত ম্যনুয়ালি। এখন থেকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পোড়ানো হবে। এতে পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি সংক্রামক রোগ ছড়ানোও বন্ধ হবে।

মেডিকেল বর্জ্য ইন্সিনারেটর প্ল্যান্ট সংক্রান্ত চসিকের এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, নগরের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎপাদিত মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তথা সংগ্রহ, পরিবহন এবং বিশোধনের জন্য ‘চট্টগ্রাম সেবা সংস্থা’ (সিএসএস) নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে চসিক। প্রতিষ্ঠানটি নগরের ২৮৩টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৩ টি থেকে মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করে হালিশহর আনন্দবাজার আবর্জনাগারে পৌঁছে দেয়। সিএসএস দৈনিক প্রায় দেড় টন মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করে। যা এখানকার সমগ্র মেডিকেল বর্জ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, চসিক বছরের পর মেডিকেল বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় ভুগছে। যেমন ইন্সিনারেটর না থাকায় সিএসএস কর্তৃক সংগৃহীত বর্জ্য উন্মুক্ত অবস্থায় পোড়ানো হয় এবং সাধারণ বর্জ্যের সাথে মিশিয়ে হালিশহর বর্জাগারে ফেলা হয়। বেশ কিছু ছোট স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের মেডিকেল বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয় না। কিছু প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে তাদের মেডিকেল বর্জ্য সাধারণ ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। উৎসে মেডিকেল বর্জ্য বাছাই করা হয় খুব কম পরিসরে এবং সাধারণ বর্জ্যের সাথে সংক্রামক মেডিকেল বর্জ্য মিশিয়ে ফেলা হয়।

প্রতিবেদনটি সূত্রে জান গেছে, বর্জ্য অব্যবস্থাপনাজনিত চিহ্নিত সমস্যাগুলোর সমাধানে চসিক গত বছরের শুরুতে জাইকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প দলের সাথে আলোচনা শুরু করে। পরবর্তীতে মেডিকেল বর্জ্য ইন্সিনারেটর স্থাপনের মাধ্যমে মেডিকেল ব্যবস্থাপনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা চায় জাইকার কাছে। এর প্রেক্ষিতে ‘দি প্রজেক্ট ফর স্ট্রেনথিং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইন ঢাকা নর্থ সিটি, ঢাকা সাউথ সিটি অ্যান্ড চট্টগ্রাম সিটি’ প্রকল্পের আওতায় চসিককে ইন্সিনারেটর প্ল্যান্টট অনুদান হিসেবে প্রদান করে।

জানা গেছে, বিদ্যুৎ, পানি, ডিজেল এবং কর্মচারীর বেতনসহ প্ল্যান্টটি পরিচালনায় দৈনিক ১৩ হাজার ২৫৮ টাকা করে মাসে ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৯২ টাকা খরচ হবে। সিএসএস থেকে এ টাকা আদায়ের পরিকল্পনা আছে চসিকের। -দৈনিক আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!