Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | তাসফিয়ার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

তাসফিয়ার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

4594587b73f928bced60f7c44c2ef3d8-5aeb77b5abec5

নিউজ ডেক্স : নগরীর সানশাইন স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় তার ছেলেবন্ধু আদনান মির্জাকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও মৃত্যুর রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি। ষোল বছরের ওই তরুণী কীভাবে, কখন পতেঙ্গার নদীর পাড়ে গেল এবং তার দুই ধরনের পোশাক নিয়ে অনুসন্ধান করছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যার সময় নগরীর গোলপাহাড় মোড় থেকে মেয়েটি বাসায় গিয়েছে কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে মেয়েটি বাসায় যাচ্ছিল। কিন্তু বাসায় না গিয়ে সে পতেঙ্গায় কেন গেল সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর শীঘ্রই রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবে বলেও জানান আনোয়ার হোসেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল মর্গে তাসফিয়ার ময়নাতদন্ত করা হয়। তার শরীরে বিষক্রিয়া আছে কিনা এবং ধর্ষিত হয়েছে কি না এমন আলামতের জন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

এদিকে তাসফিয়ার বাবার দায়ের করা হত্যা মামলার অন্য আসামিদের খুঁজছে পুলিশ। আসামিদের মধ্যে যুবলীগের এক নেতাও আছেন। ফিরোজ নামের ওই যুবক নগরীর মুরাদপুর এলাকায় রাজনীতি করেন। মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর এলাকার মাজারের পাশে তার বাসা।

বৃহস্পতিবার নিহত তাসফিয়ার বাবা মো. আমিন আদনান মির্জাকে (১৬) প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫ থেকে ৬ জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা এবং উপধারা ৩৪ অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- সোহাইল (১৬), সওকত মিরাজ (১৬), আসিফ মিজান (২৩), ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম এবং মো. ফিরোজ (৩০)।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার গ্রেফতার আদনান মির্জাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করেন। তাসফিয়া হত্যা রহস্যময় এবং চাঞ্চল্যকর উল্লেখ করে আদালতে রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরেফীন জুয়েল বলেন, আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি মেয়েটির কীভাবে মৃত্যু হয়েছে। সেটা জানার জন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-রেসেঁ্তারা থেকে বের হয়ে মেয়েটি তার ছেলে বন্ধুর কাছ থেকে আলাদা হওয়ার পর বাসায় গেছে কিনা সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

তাসফিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, আদনানের সাথে তাসফিয়ার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। মাসখানেক আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত মঙ্গলবার তারা বেড়াতে বের হয়ে নগরীর গোলপাহাড় এলাকায় চায়না গ্রিল নামের একটি রেস্তোরাঁয় খেতেও যায়। রেস্তোরাঁ থেকে দুজন একসাথে বের হয়ে তাসফিয়া আলাদা সিএনজি করে চলে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ তাসফিয়া আমিন।

গত বুধবার সকালে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ব্রিজঘাটের পাথরের উপর থেকে স’ানীয়দের সহযোগিতায় ১৬ বছরের তাসফিয়া আমিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাসফিয়ার মৃতদেহ শনাক্ত করে তার পরিবার। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর খুলশী থানা এলাকার জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি থেকে তাসফিয়ার বন্ধু আদনানকে গ্রেফতার করা হয়। আদনান মির্জা বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তদন্তের স্বার্থে আদনানের মোবাইল ফোন জব্দসহ মোবাইলের কললিস্ট, ফেসবুক ও হোয়াইটসঅ্যাপসহ তথ্য আদান প্রদানের বিভিন্ন উপাদানও সংগ্রহ করা হয়েছে।

সূত্র : দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!