Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চসিক নির্বাচন : ৫৫ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ১০৭ বিদ্রোহী

চসিক নির্বাচন : ৫৫ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের ১০৭ বিদ্রোহী

নিউজ ডেক্স : দফায় দফায় বৈঠক, বহিষ্কারের মতো কঠোর হুঁশিয়ারির পরেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দলীয় বিদ্রোহ ঠেকাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঢাকা থেকে উড়ে গিয়েছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এসবের কোনোটিই কাজে আসেনি। নগরের ৫৫টি ওয়ার্ডে (সংরক্ষিতসহ) প্রতিদন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের ১৬২ নেতাকর্মী। যাদের মধ্যে ১০৭ জনই বিদ্রোহী প্রার্থী।

রোববার (৮ মার্চ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে মেয়র পদে একজন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫০ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দুইজন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন বলে জানান রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান।

এখন ভোটের লড়াইয়ে আছেন মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৬১ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এ অবস্থায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলে নানান চাপে দলসমর্থিত প্রার্থীরা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নানা জটিল সমীকরণে বিএনপি বাড়তি সুবিধা পেতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চসিক নির্বাচনের ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদন্দ্বিতা করছেন ১৬১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থনে নির্বাচন করছেন ৪১ জন। এর বাইরে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন ৮০ জন অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ প্রার্থী। যাদের মধ্যে রয়েছেন দলটির বর্তমান ৮ সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর। দলের সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন মাত্র একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তিনি ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. জয়নাল আবেদীন।

এ ছাড়া আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে ১৪ নং লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম, ২১ নং জামাল খান ওয়ার্ডের তিনবারের কমিশনার অ্যাডভোকেট এম এ নাছের, সাবেক কাউন্সিলর প্রকৌশলী বিজয় কিষান চৌধুরী, ২৮ নং দক্ষিণ পাঠানটুলি ওয়ার্ডের প্রার্থী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের মফিজ-রহিম কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে বর্তমান কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়ে গেছেন, ৯, ১০ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরক্ষিত ৪) আবিদা আজাদ ও ১২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের (সংরক্ষিত ৯ নম্বর) ফারহানা জাবেদ। এর বাইরে দলের বিভিন্ন পদে আছেন এমন ২৬ নারী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। – জাগো নিউজ

পাঁচ ওয়ার্ডে বিদ্রোহী নেই

ঘোষিত তালিকা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর শুধু পাঁচটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী আছেন। ওয়ার্ডগুলো হলো- ৬ নম্বর পূর্ব-ষোলশহর ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম, ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে শৈবাল দাশ সুমন, ২৩ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে মোহাম্মদ জাবেদ, ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ডে হাজী নুরুল হক, ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে জিয়াউল হক সুমন।

এ ছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে দুটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী আছেন। তারা হলেন- ১২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আফরোজা জহুর (আফরোজা কালাম) ও ১৪ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহানুর বেগম।

মানোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বিএনপির ১০ বিদ্রোহী

এদিকে বিএনপির ১৪ বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে ৪ জন ছাড়া বাকি সবাই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্যে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তারা হলেন, আকবরশাহ থানা মহিলা দলের সভাপতি ইসমত আরা জেরিন ও বাকলিয়া থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা নাসরিন।

এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে বিএনপির দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করছেন। তারা হলেন- মহানগর বিএনপির সদস্য আজিজুর রহমান বাবুল ও মহসীন আলী চৌধুরী।

ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিদ্রোহীর ছড়াছড়ি আ.লীগে

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন গাজী মোহাম্মদ শফিউল আজিম। এখানে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন বর্তমান কাউন্সিলর তৌফিক আহমদ চৌধুরী, মো. ইলিয়াছ, ইকবাল হোসেন, আহমদ নূর ও কাজল নাথ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব উল্লাহ বাহার ও নিয়াজ মোরশেদ। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।

২ নং জালালাবাদ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এখানে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর মা. সাহেদ ইকবাল (বাবু), আবুল কালাম আবু, ও গিয়াসউদ্দিন ভূঁইয়া। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী এয়াকুব চৌধুরী।

৩ নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর কফিলউদ্দিন খান। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- শফিকুল ইসলাম, ইলিয়াছ আহমদ লেদু, আমির হোসেন, সেলিমউদ্দিন, আবুল কালাম, জসিমউদ্দিন, মোরশেদ হোসেন ও ইকবাল। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মো. ইলিয়াছ।

৪ নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- আনিসুর রহমান, নাছির উদ্দিন, এসরারুর হক, জাহেদ গিয়াস উদ্দীন আহমেদ ও ইউসুফ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন নাজমুল হক, হুমায়ুন কবির, জামাল উদ্দীন ও আমজাদ হোসেন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মাহবুবুল আলম।

৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ কাজী নুরুল আমিন (মামুন)। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী – ইব্রাহিম হোসেন, আইয়ুব আলী চৌধুরী, ও রাশেদুল ইসলাম। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন জসিম উদ্দীন, নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, খালেদ হোসেন খান। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির প্রার্থী মো. আজম। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে মনোনয়ন ফরম জমা দিলেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন স্থানীয় বিএনপির ওয়ার্ড সভাপতি জানে আলম জিকু।

৬ নং পূর্ব-ষোলশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। এখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল আলম। বিএনপির প্রার্থী মুহাম্মদ হাসান লিটন।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগরের ৪১ সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে এবার প্রথমবারের মতো কাউন্সিলর পদে ৫৫ জনকে সমর্থন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জিতে আসা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ১৯ জন এবার সমর্থন পাননি। তাদের মধ্যে ১১ জনই এবার বিদ্রোহী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এ ছাড়া পাঁচটি ওয়ার্ড ছাড়া প্রত্যেক ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত অথবা পদ-পদবিতে থাকা ৩-৪ জন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

যেমন-
৭ নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ঘোষণা করা হয় বর্তমান কাউন্সিলর মো. মোবারক আলীকে। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন- শামীম ও এয়াকুব। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা রিজুয়ান উদ্দীন চৌধুরী। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী বিএনপির ইসকান্দার মির্জা।

৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মোরশেদ আলম। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- আবুল হাসান সুমন, মোহাম্মদ মহসীন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী হাসান চৌধুরী।

৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নুরুল আবছার মিয়া। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম ও ফজলে আজিম দুলাল। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী আবদুস সাত্তার সেলিম।

১০ নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর নেছার উদ্দিন আহমেদ। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- মনোয়ারুল আলম চৌধুরী। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী রফিক উদ্দীন চৌধুরী।

১১ নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইসমাইল। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর মোর্শেদ আকতার চৌধুরী, খন্দকার এনামুল হক, নুরুল হুদা চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী সোহারাব হোসেন চৌধুরী।

১২ নং সরাইপাড়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নুরুল আমিন। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর সাবের আহম্মেদ, সাইফুল আলম ও আসলাম হোসেন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী শামসুল আলম।

১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী। এখানে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- মাহামুদুর রহমান ও কাজী অতনু জামান। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা আলমগীর। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।

বিদ্রোহ ঠেকাতে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ ছিল না

মনোনয়ন পেয়েছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে বিদ্রোহীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃশ্যমান জোরালো ভূমিকা ছিল না। তারা বরং সময়ক্ষেপণের কৌশল নিয়েছিলেন। এ ছাড়া চট্টগ্রামে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রক নেতা যারা তাদের কয়েকজনের ভূমিকাও ছিল রহস্যজনক। দৃশ্যমান চাপ না থাকায় বিদ্রোহীরা মাঠ ছেড়ে যাননি।

১৪ নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর আবুল ফজল করিম আহমেদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম, তৌহিদ আজিজ ও মো. আবদুল কাদের। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী আবদুল হালিম (শাহ আলী)। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বিএনপি নেতা আবদুল আলিম স্বপন।

১৫ নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আরিফুল ইসলাম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী চৌধুরী সায়েফুদ্দীন রাশেদ সিদ্দিকী।

১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সৈয়দ গোলাম হায়দার মিন্টু। এখানে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন- দেলোয়ার হোসাইন ও নূর মোস্তফা টিনু। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন কায়সার আহমদ ও সাহেদুল আজম শাকিল। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী সালাউদ্দীন কাউসার।

১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ শহিদুল আলম। এখানে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী শোয়েব খালেদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন মাসুদ করিম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর এ কে এম আরিফুল ইসলাম (ডিউক)।

১৮ নং পূর্ব-বাকলিয়া ওয়ার্ডে একক প্রার্থী আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত হারুন অর রশিদ। বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ তৈয়বের মনোনয়ন অবৈধ এবং অপর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী আজিজুল হক মাসুম প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করায় হারুন অর রশিদই এখন ওই ওয়ার্ডের একমাত্র প্রার্থী।

১৯ নং দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. নুরুল আলম। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী- দিদারুল আলম ও আজিজুর রহমান। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির প্রার্থী ইয়াছিন চৌধুরী (আছু)।

বহিষ্কারের ঘোষণা এত পরে কেন?

রোববার (৮ মার্চ) ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। কিন্তু এর আগে কয়ে দফা বৈঠকে হুঁশিয়ার করা হলেও দল কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার কোনো বক্তব্য ছিল না। বিদ্রোহীদের অনেকেই দলের সিদ্ধান্ত জানার জন্য সার্কিট হাউজের বাইরে অবস্থা নিলেও কথিত রুদ্ধদ্বার বৈঠক থেকে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। অথচ রোববার বিকেলে যখন দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তখন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই অনেকের মনেই প্রশ্ন এসব কি শুধুই সময়ক্ষেপণ ছিল? যে কারণে পুরো বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নেন বিদ্রোহীরা। তাইতো –

২০ নং দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর মতো মাঠের রাজনীতিবিদকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হলেও দলের একেবারে জুনিয়র সদস্য রফিকুল আলম বাপ্পী বিদ্রোহী প্রার্থী হন। তবে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন মিটল দাশগুপ্ত। এখানে বিএনপির প্রার্থী বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী।

২১ নং জামালখান ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন। এ ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ছয় বিদ্রোহী প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। তারা হলেন- আবদুল হান্নান, ফরহাদুল ইসলাম, সুচিত্রা গুহ টুম্পা, আবদুল নাসের, বিজয় কুমার চৌধুরী ও রাজীব দাশ সুজয়। এখানে বিএনপির প্রার্থী আবু মোহাম্মদ মহসীন চৌধুরী।

২২ নং এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন সাব্বির চৌধুরী। এখানে বিএনপির প্রার্থী আবদুল মালেক।

২৩ নং উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ মোহাম্মদ জাবেদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের আসিফ খান, সিরাজুল ইসলাম ও মো. জাহেদ এবং বিএনপির মুহাম্মদ রিয়াদ খান। এখানে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মহসীন।

২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন বর্তমান কাউন্সিলর নাজমুল হক। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- রকিবুল আমিন, রাশেদুল ইসলাম ও জাবেদ নজরুল ইসলাম। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী ফরিদুল আলম।

২৫ নং রামপুরা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুস সবুর লিটন। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী – বর্তমান কাউন্সিলর এসএম এরশাদ উল্লাহ। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী শহীদ মো. চৌধুরী।

২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন। বিদ্রোহী প্রার্থী – ইলিয়াছ, নাঈম উদ্দিন ও ইমতিয়াজ সবুজ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের নাজিমুল ইসলাম মজুমদার। এখানে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মো. আবুল হাশেম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করছেন। তারা হলেন- মহানগর বিএনপির সদস্য আজিজুর রহমান বাবুল ও মহসীন আলী চৌধুরী।

২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর এইচএম সোহেল, মোহাম্মদ ইসকান্দর মির্জা। এখানে বিএনপির একক প্রার্থী মোহাম্মদ সেকান্দর।

২৮ নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর আবদুল কাদের (মাছ কাদের), এ বি এম মোস্তাফা কামাল, মনিরউল্লাহ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আবদুর রহিম আরসেনী। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী জামালউদ্দিন জসিম।

২৯ নং পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- আজিজ উর রশিদ ও সাজ্জাদ হোসেন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

৩০ নং পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আতাউল্লাহ চৌধুরী। বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী ও চৌধুরী জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান।

৩১ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুস সালাম। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিম, হানিফ ভূঁইয়া। এখানে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ দিদারুর রহমান।

৩২ নং আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত জহর লাল হাজারী। বিদ্রোহী প্রার্থী সুজিত সরকার ও নোমান লিটন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন একে এম জাবেদুল আলম। এখানে বিএনপির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ লেদু।

আ.লীগের বিদ্রোহীর কারণে লাভের ফসল ঘরে উঠাবে কি বিএনপি?

আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো জানায়, বিভিন্ন সময় বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, বরং বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে যেন বিএনপি প্রার্থী জিতে না যান সেদিকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। যেসব ওয়ার্ডে এমন সম্ভাবনা আছে বলে মনে করা হচ্ছে, শুধু সেসব ওয়ার্ডের বিদ্রোহীদের বসিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলবে।

বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে লাভবান হতে পারে ৩৩নং ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের বিএনপির প্রার্থী ছাদেকুর রহমান। এখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- বর্তমান কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব ও হোসাইনুর রশিদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের রফিকুল হোসেন বাচ্চু ও বিএনপির মেজবাহ উদ্দিন মিন্টু।

৩৪নং পাথরঘাটা ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালি। আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী পুলক খাস্তগীর, দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- মোহাম্মদ দিদারুল আলম, বিজয় কৃষ্ণ দাশ ও অনুপ বিশ্বাস। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ঝুলন দেবনাথ।

৩৫ নং বক্সিরহাট ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর হাজি নুরুল হক ও বিএনপির তারিক আহমদ। এ ওয়ার্ডে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই।

৩৬ নং গোসাইলডেঙ্গা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- সাকির, মোর্শেদ আলী ও সাইফুল আলম চৌধুরী। এখানে বিএনপির প্রার্থী মো. হারুন।

৩৭ নং উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হোসেন মুরাদ। এখন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- মোহাম্মদ এনামুল হক ও ইবনে মবিন ফারুক। এখানে বিএনপির প্রার্থী মো. ওসমান।

৩৮ নং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর গোলাম মো. চৌধুরী। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী- হাসান মুরাদ। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন আওয়ামী লীগের বদিউর রহমান, সালাউদ্দিন ও আবু নাছের। বিএনপি নেতা মো. আজম উদ্দিনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। এ ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী হানিফ সওদাগর।

৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী বিএনপির সরফরাজ কাদের। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হাসান মাহমুদ আনসারী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন।

৪০নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবদুল বারেক। বিদ্রোহী হয়েও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন বর্তমান কাউন্সিলর মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। এখন দলের বিদ্রোহীরা হলেন- ফরিদুল আলম ও জয়নাল আবেদীন চৌধুরী। এ ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ হারুন।

৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ফজল করিম, মঞ্জুর আলম, নুরুল আবছার, আবদুর রহিম, মোহাম্মদ আলমগীর, ও মো. রফিক। মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ওয়াহিদুল আলম চৌধুরী। এখানে বিএনপির প্রার্থী আবছার।

মেয়র বাঁচাতে কাউন্সিলরে ঢিমেতাল!

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায় থেকে মনোনয়ন পাওয়া ও মনোনয়ন বঞ্চিতদের আর কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন বঞ্চিতদের বিষয়ে কঠিন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হলে তার প্রভাব মেয়র নির্বাচনে পরতে পারে, তাই আওয়ামী লীগ এ কৌশল নিয়েছে। তাই রোববার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

তবে একবারে শেষ মুহূর্তে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলরদের প্রার্থীতা বদলের সিদ্ধান্ত হয়।

১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর সৈয়দা কাশফিয়া নাহরিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেরদৌস বেগম মুন্নী ও মোবাশ্বেরা বেগম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী রোকসানা বেগম।

২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর জোবাইরা নার্গিস খান। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী শামসুন নাহার, রোকেয়া বেগম, সিরাজুন নুর বেগম ও অশ্রু চৌধুরী। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মোছাম্মৎ শাহেনেওয়াজ চৌধুরী।

৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান কাউন্সিলর জেসমিন পারভীন জেসি। বিদ্রোহী জোহরা বেগম ও নুর তাজ বেগম। মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী নাহিদা ইয়াছমিন। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী জিন্নাতুন নেছা জিনু।

৪ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী তছলিমা বেগম (নুরজাহান)। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী বর্তমান কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, নাদিরা সুলতানা ও মোছাম্মৎ আয়শা আক্তার। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী সকিনা বেগম। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেত্রী ইসমত আরা জেরিন।

৫ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নবুয়াত আরা সিদ্দিকা। এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনি। তার বিপরীতে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন রেজিয়া বেগম।

৬ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহীন আক্তার রোজী। এ ওয়ার্ডে দলের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের শামীমা নাসরিন, সালেহা বেগম, শাহিদা বেগম পারভীন ও কাজী শাহিনা সুলতানা ডলি। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মাহমুদা সুলতানা।

৭ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী রুমকি সেনগুপ্ত। এ ওয়ার্ডে দলের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান কাউন্সিলর আনজুমান আরা বেগম ও আওয়ামী লীগ নেত্রী চৈতী বসু মল্লিক। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী পারভীন আকতার চৌধুরী।

৮ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর নীলু নাগ। দলের বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগের জিন্নাত সুলতানা, আলতাজ বেগম বুবলী ও পম্পি দাশ। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী আরজুন নাহার মান্না।

৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর ফারহানা জাবেদ। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী- গুলজার বেগম রুবি ও জাহেদা বেগম পপি। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী বিএনপির খালেদা বোরহান।

১০ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হুরে আরা বেগম। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী রাধা রানী দেবী ও সুপ্তি তলাপাত্র। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপির প্রার্থী জেসমিনা খানম।

১১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হলেন জিন্নাত আরা বেগমকে পরিবর্তন করে বর্তমান কাউন্সিলর ফেরদৌসি আকবরকে প্রার্থী করা হয়েছে। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বিবি মরিয়ম। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী কামরুন নাহার লিজা।

১২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আফরোজা জহুর (আফরোজা কালাম)। এই ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই দলটিতে। বিএনপির প্রার্থী শাহিদা খানম।

১৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেত্রী দাশগুপ্ত। এ ওয়ার্ডে বিএনপির একক প্রার্থী মনোয়ারা বেগম।

১৪ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহানুর বেগম। এই ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই দলটিতে। বিএনপির প্রার্থী জাহিদা হোসাইন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল চোখে পড়ার মতো। চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১৯ জন। সিটি নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই প্রথম আওয়ামী লীগ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক মেয়র হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। মূলত তাদের অনেকে ক্ষমতাসীন দলের ওপর ভর করে বৈতরণি পার হতে চেয়েছিলেন। কাউন্সিলর প্রার্থিতার ক্ষেত্রেও সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল।

বিদ্রোহীদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারে রাজি করাতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাই কোনো ফল আসেনি। গত বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) চসিক নির্বাচনের সমন্বয়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে বিদ্রোহীদের প্রথম দফা সংলাপ ভেস্তে যাওয়ার পরে শেষবারের মতো চেষ্টা চালাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বর্ধিত সভায় যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গেছে, ওবায়দুল কাদেরও বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী নন। পরে শুক্রবার রাতে পূর্ব নির্ধারীত সেই সভা স্থগিত করা হয়।

শেষ চেষ্টা হিসেবে শনিবার রাতেও চসিক নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বিদ্রোহীদের সঙ্গে বসে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কঠোর বার্তা দেন। এর আগে দুপুরে শিক্ষাউপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিদ্রোহীদের ডেকে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করা নির্দেশ দেন। দফায় দফায় বৈঠক-কঠোর বার্তা, তারপরও তাদের নমনীয় করা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!