ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | চট্টগ্রাম জেলায় ঝরে গেল প্রাথমিকের সাড়ে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম জেলায় ঝরে গেল প্রাথমিকের সাড়ে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রাম জেলার প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মাঝে সাড়ে ১১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। করোনা সংক্রমণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম চালু হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম চালু পরবর্তী এক মাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে বছরের শেষে আমরা ‘ড্রপ আউট’ (ঝরে পড়া) সংক্রান্ত তালিকা প্রস্তুত করে থাকি। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ ভাবে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী- জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ জন। এর মাঝে অর্ধ লাখের বেশি (৫৬ হাজার ৩১৩ জন) শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে শ্রেণি কার্যক্রমে অনুপস্থিত।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন- অনুপস্থিত সকল শিক্ষার্থীর পরিবারের সাথে স্কুল থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। অনেকের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও একটি অংশের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি এমন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ভাবে ‘ড্রপ আউট’ (ঝরে পড়া) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ১১ হাজারের বেশি (১১ হাজার ৫৫৯ জন) শিক্ষার্থী এই ঝরে পড়ার তালিকায় স্থান পেয়েছে। আরো ৪২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী শ্রেণি কার্যক্রমে অনুপস্থিত থাকলেও তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে, অনুপস্থিত এমন শিক্ষার্থীদের অনিয়মিত হিসেবে দেখছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম। তিনি আজাদীকে বলেন, অনুপস্থিত কিন্তু যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে, এমন শিক্ষার্থীদের আমরা অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে চিহ্নিত করেছি। তারা হয়তো কোন কারণে অনুপস্থিত রয়েছে। তবে পড়ালেখা ছেড়ে দেয়নি। অসুস্থতা, বাসা স্থানান্তর, বেড়াতে যাওয়া, মাদ্রাসা বা অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তিসহ বিভিন্ন কারণে এসব শিক্ষার্থী শ্রেণি কার্যক্রমে অনুপস্থিত।

তবে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের একটি অংশের সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা দশ হাজারের কিছু বেশি। যোগাযোগ করতে না পারা এবং কোন তথ্য না পাওয়া এসব শিক্ষার্থীদের আমরা প্রাথমিক ভাবে ‘ড্রপ আউট’ হয়েছে বলে মনে করছি। কাজে যোগদান বা পরিবারের আয়ে সহায়তায় এসব শিক্ষার্থী পড়ালেখা ছাড়তে পারে বলে আমাদের ধারণা।

তবে অনুপস্থিত আরো ৪২ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থীর মাঝেও ঝরে পড়ার শঙ্কা রয়েছে কী না, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, স্বাভাবিক ভাবে বছরের শেষে আমরা ঝরে পড়ার তালিকা প্রস্তুত করে থাকি। সে হিসেবে এই ডিসেম্বরের পরে (জানুয়ারিতে) চূড়ান্ত ভাবে ঝরে পড়ার তালিকা তৈরি করা হবে। অনিয়মিত এসব শিক্ষার্থীদের মাঝেও ড্রপ আউট আছে কী না, তা ওই সময় বলা যাবে।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে- প্রাথমিক পর্যায়ে জেলায় মোট শিক্ষার্থীর ১০.৪২ শতাংশ শ্রেণি কার্যক্রমে অনুপস্থিত। এর মাঝে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে এমন অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর হার প্রায় ৮ শতাংশ (৭.৯২ শতাংশ)। আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি, অনুপস্থিত এমন শিক্ষার্থীর হার ২.১৪ শতাংশ। যোগাযোগ করা যায়নি, অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে এই অংশকে (২.১৪ শতাংশ) ঝরে পড়া হিসেবে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়। -আজাদী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!