ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা না পেয়ে চট্টগ্রাম ছাড়লেন স্বাস্থ্য পরিচালক!

অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা না পেয়ে চট্টগ্রাম ছাড়লেন স্বাস্থ্য পরিচালক!

নিউজ ডেক্স : চট্টগ্রামে করোনা-আক্রান্ত মায়ের কিডনি ডায়ালাইসিসে ব্যর্থ হয়ে মুমূর্ষু মাকে নিয়ে শেষপর্যন্ত চট্টগ্রাম ছাড়তেই বাধ্য হলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। শুক্রবার রাতে অসুস্থ মাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছাড়েন তিনি।

ঢাকায় পৌঁছে শনিবার সকাল ১১টার দিকে আনোয়ার খান হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিচালকের মা রাজিয়া কবীরের  (৭৩)কিডনি ডায়ালা্ইসিসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ফের বন্ধ হয়ে গেছে। তবে সে ত্রুটি সারানোর চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।

এদিকে এমনিতেই রাজিয়া কবীরের শারীরিক অবস্থা আগে থেকে ভালো নেই। তাকে দুইদিন পর পর ডায়ালাইসিস করতে হয়। করোনা-পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর বিপাকে পড়তে হয় তাকে। চট্টগ্রামের কোনো হাসপাতাল ডায়ালাসিস করতে রাজি না হওয়ায় তার দুটি ডায়ালাইসিস বাকি রয়ে গেছে। এই পরি্স্থিতিতে শুক্রবার রাতে তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর ও তার মা রাজিয়া কবীরের  করোনা-পজিটিভ রিপোর্ট আসে।

জানা যায়, এরপরই চট্টগ্রামে তার ডায়ালাইসিসের পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বী মেট্রোপলিটন হাসপাতাল, ম্যাক্স হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতাল, সিএসসিআর, ইম্পেরিয়ালসহ যে কয়টি হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ব্যবস্থা আছে মোটামুটি সবার সাথে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কেউ সায় দেননি। সবারই এক কথা, তাদের ডায়ালাইসিস মেশিনে করোনা রোগী ঢোকালে বাকিরাও আক্রান্ত হবে। চমেক হাসপাতালের ডায়ালাইসিস মেশিন বিকল থাকায় সেখানেও ডায়ালাইসিস সম্ভব হয়নি। ফলে মায়ের চিকিৎসায় ব্যর্থ হয়ে চট্টগ্রাম ছাড়তে বাধ্য হলেন স্বাস্থ্য পরিচালক।

করোনা-পজিটিভ রোগীকে যেখানে আইসোলেশনে থাকতে হয়, সেখানে স্বাস্থ্য পরিচালককে করোনা-পজিটিভ হওয়া সত্ত্বেও মায়ের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে শনিবার দুপুরে বলেন, চট্টগ্রামে মায়ের চিকিৎসা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ঢাকায় চলে আসতে হলো্। আমি নিজে কাউকে বলিনি। সিভিল সার্জনকে দিয়ে চট্টগ্রামের ডায়ালাইসিস সুবিধা সম্বলিত হাসপাতালগুলোতে অনুরোধ করা হয়েছিল। তারা কেউ রাজি হলো না। গতকাল আসার প্রস্তুতি যখন নিয়ে ফেলেছি, তখন মেট্রোপলিটন হাসপাতাল জানাল, ৬ ঘণ্টা সময় দিলে তারা কেবল আমার মা’র ডায়ালাইসিস করানোর উদ্যোগ নেওয়ার চেষ্টা করবে। আমি তাতে রাজি হইনি। স্বাস্থ্য পরিচালকের মায়ের যদি  এমন হয়, সাধারণ রোগীদের কী অবস্থা হবে, এমন উপলব্ধি খোদ চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য পরিচালকের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. রেজাউল করিম বলেন, স্বাস্থ্য পরিচালকের মায়ের ডায়ালাসিসের ব্যাপারে আমার হাসপাতালের কারো সাথে যোগাযোগ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এটা ঠিক, ডায়ালাইসিস মেশিন খুবই স্পর্শকাতর। সেখানে একবার করোনা রোগী ঢুকলে অন্য সাধারণ রোগীরাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়বে। কাজেই যেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে, সেখানকার মেশিনেই ডায়ালাইসিস করানো নিরাপদ। – বলেন পার্ক ভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একুশে পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!