নিউজ ডেক্স : স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে আবারও ১১ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হলে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সাল থেকে অন্তত পাঁচবার এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে আলটিমেটাম দিয়েছে। সর্বশেষ দেয়া আলটিমেটাম চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেষ হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মেগাসিটিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য এক একর অখণ্ড জমি থাকতে হবে এবং সেখানেই সব শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে হবে। মেগাসিটির বাইরে অথবা যে কোনো জেলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা ও পাঠদান করতে হবে দুই একর নিজস্ব অখণ্ড জমির ওপর। কিন্তু অনুমতিপ্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইনের এ শর্ত শতভাগ পূরণ করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রায় দুই যুগ আগে অনুমোদন পেলেও এখন পর্যন্ত নিজস্ব ও স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তুলেনি অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এই তালিকায় ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিহ্নিত করেছে উচ্চ শিক্ষা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
ইউজিসির সর্বশেষ সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। গত ১৬ আগস্ট মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জিন্নাত রেহানা স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক চিঠি ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ইস্যু করা হয়। এতে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুমোদিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে (৩১ ডিসেম্বর) সব শিক্ষাকার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিই প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না। কোনো কোনোটি জমি ক্রয় করলেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে কোনো পদক্ষেপ শুরুই করেনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে যে ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়ে সর্বশেষ আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে সেগুলো হলো- স্টেট ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, শান্তা-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, ইউল্যাব ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, নর্দান ইউনিভার্সিটি, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা সচিব ও মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অতিরিক্ত সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে গত ৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
ইউজিসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথ কমিটির সুপারিশ এবং ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই ওই চিঠি দেয়া হয়েছে ১১ বিশ্ববিদ্যালয়কে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী এ চিঠি পাঠানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ইউজিসির সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই মন্ত্রণালয় থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।