Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | সুন্দরবনে মিলল ৯৬ হরিণসহ ১০০ মৃত প্রাণী

সুন্দরবনে মিলল ৯৬ হরিণসহ ১০০ মৃত প্রাণী

নিউজ ডেক্স: ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে কাজ করে যাচ্ছে বন বিভাগ। এখন পর্যন্ত ৯৬টি হরিণ ও চারটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২৮ মে) থেকে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পর্যন্ত বন বিভাগের বিভিন্ন চর থেকে এসব মৃতদেহ উদ্ধার করে বনরক্ষীরা।  এছাড়া এ সময়ে জীবিত ও আহতাবস্থায় ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এসব প্রাণী বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মিহির কুমার দে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোব ও সোমবার (২৬ ও ২৭ মে) দুদিন জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ প্লাবিত হয়। কোথাও কোথাও স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে ২-৬ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। উচ্চ জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহীনে চলে যাওয়ায় হরিণগুলো ভেসে গিয়ে সাঁতরে কূলে উঠতে পারেনি। এ কারণে হরিণগুলো মারা যেতে পারে বলে ধারণা বন বিভাগের। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবের দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এই জোয়ারের উচ্চতা ছিল ১০-১২ ফুট।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ প্লাবিত হয়েছে। মিষ্টি পানির পুকুরগুলো সব লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের পরে বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলারচর ও নারিকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মৃত অবস্থায় ৯৬টি হরিণ ও চারটি বন্য শূকর পাওয়া গেছে। এসব মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮টি জীবিত হরিণ এবং একটি জীবিত অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।

সুন্দরবনের প্রাণীদের রক্ষায় করণীয় বিষয়ে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের মতো সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীরাও প্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেয়। পানি তাদের কাছে নতুন কিছু নয়। তারা নিয়মিত দিনে দুবার জোয়ার-ভাটা দেখে অভ্যস্ত। এছাড়া অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে ভরা কটালের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি পানি থাকে। দুর্যোগের সময় যখন তীব্র ঝড় ও পানির উচ্চতা অনেক বেশি হয়, তখন হয়ত তাদের টিকে থাকা অনেক কষ্টকর। তবু তারা বছরের পর বছর সিডর, আইলা, বুলবুল, আম্পান, ইয়াস, মোখা, নার্গিস, রিমালসহ বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। শুধু দরকার সুন্দরবনের সুরক্ষা। তাহলেই যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, শিগগিরই উদ্ভিদ ও প্রাণীরা সেটা কাটিয়ে উঠতে পারবে। -বাংলানিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!