নিউজ ডেক্স : সাতকানিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সবজি চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের পাহাড়ি ও উচ্চ সমতল ভূমিতে আগাম সবজি চাষিরা গোলআলু, মুলা, বেগুন, শিম, বরবটি, মরিচ, লাউ, শসা ইত্যাদি চাষ করে ভালো ফলনের আশায় কাজ করে যাচ্ছেন। আবার অনেক সবজি চাষি এক ফসলি জমিতে তিন ফসল চাষ করছেন। মাচাং এ ঝুলছে শীম, লাউ, বরবটি, বেগুন, আর মাটির নিচে গোলআলু। এ ধরনের সবজি ফলিয়ে উপজেলার অনেক সবজি চাষি স্বাবলম্বীও হয়েছেন। ক্ষেতের এসব সবজি চাষ করে সাংসারিক খরচ মিটিয়ে বাড়তি কিছু ও সঞ্চয় করছেন। পুঁজি ও শ্রম কম হওয়ায় এ ধরনের সবজি চাষ সাতকানিয়া সবজি চাষিদের ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। অপরদিকে গোলআলু চাষি যাদের ক্ষেতে পাতা মোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে তারা দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন।
ইউনিয়নে নিয়োজিত উপজেলার উপসহকারী কর্মকর্তার পরার্মশে এক ফসলি জমি হয়েছে তিন ফসলি। যে জমিতে আগে মাত্র একবার ধানি ফসল বা সবজি ফলতো এখন সে জমিতে ১২ মাস ফলছে নানা প্রকার শাকসবজি ও মৌসুমী ফল।
সরজমিন পরিদর্শনে উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের হাতিয়ারকুল এলাকার বিল ও কালামিয়া পাড়ার পশ্চিমের পাহাড়ের গিয়ে দেখা যায় পাহাড়ের পাদদেশে চলছে শীতকালীন সবজি গোলআলুর চাষ। কিছু পরিপক্ব আবার কিছু এখনো অপরিপক্ব ক্ষেত। যারা আগাম গোলআলু চাষ করছেন তাদের ফলন ভালো হয়েছে। আগাম যারা চাষ করেছেন তারা এখন ক্ষেত থেকে গোলআলু তুলছেন।
হাতিয়ারকুল এলাকার আগাম গোলআলু চাষি সোনা বড়ুয়া জানান, তিনি ৩০ শতক জমিতে গোলআলু চাষ করছেন। বিগত ৮ দিন আগে থেকে গোলআলু ক্ষেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। এ ক্ষেত করতে তার শ্রমসহ মোট খরচ হয়েছে ৮০০০ টাকা। এ পর্যন্ত তিনি ৬০০০ টাকার গোলআলু বিক্রি করেছেন। ক্ষেতের সমস্ত গোল আলু বিক্রি করতে পারলে আনুমানিক ১২০০০ টাকা আয় হবে বলে সবজি চাষি সোনা বড়ুয়া জানান। সরকারিভাবে কৃষি ঋণ পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এখনো পর্যন্ত কোনো প্রকার সরকারি ঋণ পাননি। ইউনিয়নে সাইরতলি এলাকার মরিচ চাষি ও মির্জাখীল আনোয়ারে রহমানিয়া মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ ফরহাদ জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ২৪ শতক জমিতে মরিচ চাষ ও ১২ শতক জমিতে গোলআলু চাষ করেছেন। প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে ১ মণ মরিচ এ পর্যন্ত বিক্রয় করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলেও ক্ষেতের সব মরিচ বিক্রি করতে পারলে ৭০০০ টাকা আয় হবে বলে তিনি জানান।
সাতকানিয়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সবজি গোলআলুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২০০ হেক্টর। উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন জানান, আগাম যারা গোলআলু চাষ করেছেন তাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। যে সমস্ত সবজি চাষী ক্ষেতের রোগ বালাইয়ের ব্যাপারে আমাদের নিকট আসেন তাদেরকে সাধ্যমত পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে থাকি। -ইত্তেফাক