Home | ব্রেকিং নিউজ | লোহাগাড়ায় মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহনের ছড়াছড়ি

লোহাগাড়ায় মহাসড়কে নিষিদ্ধ যানবাহনের ছড়াছড়ি

এলনিউজ২৪ডটকম : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া সীমানায় নিষিদ্ধ যানবহানের ছড়াছড়ি। এরমধ্যে রয়েছে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, ভ্যান, লেগুনা ও মালবাহী ভটভটি। যার ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দূর্ঘটনা। এছাড়া এসব নিষিদ্ধ যানবাহনের কারণে মহাসড়কে যানজট যেন নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় লেগুনার সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে ৪ মোটরসাইকেল আরোহী গুরতর আহত হন। গত ৪ সেপ্টেম্বর একইস্থানে যাত্রীবাহী বাস ও লেগুনা মুখোমুখি সংঘর্ষে নারী-শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। গত ৮ আগস্ট মহাসড়কের আমিরাবাদ কিল্লার আন্দর এলাকায় মালবাহী ট্রাক ও ট্রলি মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দূর্ঘটনায় ট্রলি চালক মো. জসিম উদ্দিনের (৪২) একটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গত ৩ আগস্ট মহাসড়কের আমিরাবাদ গোলাম নবী হাজির পাড়া এলাকায় মালবাহী ট্রাক্টরের ধাক্কায় মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৬০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এছাড়া গত সনের ২১ মার্চ মহাসড়কের চুনতি জাঙ্গালিয়া এলাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় লেগুনার ১৫ যাত্রী নিহত হয়েছিল।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই মহাসড়কে অবাধে চলাচল করছে নিষিদ্ধ যানবাহন। মহাসড়কের ঠাকুরদিঘী, পদুয়া বাজার, বটতলী মোটর ষ্টেশন, আধুনগর ও চুনতিতে গড়ে উঠেছে নিষিদ্ধ গাড়ির ষ্টেশন। বটতলী মোটর ষ্টেশনে মহাসড়কের উভয় পাশ লেগুনা, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও মালবাহী বটবটির দখলে। যার ফলে মহাসড়কে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়। ফুটপাত দখল করে রাখায় ষ্টেশনে আসা মানুষের চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। হচ্ছে। নিষিদ্ধ গাড়ি নিয়ে অদক্ষ চালক মহাসড়কে দাপটের সাথে চলাফেরা করায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন মাঝে মধ্যে লোভ দেখানো অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু তা থিতু হয় না। এছাড়া কোন ভিআইপি মহাসড়ক অতিক্রম করার খবরে পূর্ব থেকে নিষিদ্ধ গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ভিআইপি চলে যাবার পর পুণরায় মহাসড়ক দখলে নেয় নিষিদ্ধ গাড়ি। অপরদিকে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আইস পার্ক ও এমদাদিয়া মার্কেটের সামনে ফুটপাত দখল করে গড়ে তুলেছে অবৈধ লেগুনার ষ্টেশন। নিষিদ্ধ লেগুনাগুলো বটতলী থেকে চকরিয়া ও কেরানীহাট পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করে। লেগুনার অধিকাংশ চালক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ। যার ফলে মহাসড়কে প্রায় সময় দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। মূলত: মালামাল পরিবহণের জন্য এসব লেগুনা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এসব লেগুনায় ছাউনী ও সিট বসিয়ে অবৈধভাবে যাত্রী পরিবহণ করছেন। যার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঘটছে দূর্ঘটনাও।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে নিষিদ্ধ সিএনজি অটোরিক্সা ও লেগুনার কয়েকজন চালক জানান, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সা ও লেগুনা চালাতে হয়। প্রতিটি গাড়ির জন্য মাসে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিলে মামলা দেয়া হয়। তাই বাধ্য হয়েই টাকা দিয়ে মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। অনেক নামধারী সংবাদকর্মীও টোকেন ব্যবসায় জড়িতে থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিরাপদ সড়ক চাই লোহাগাড়া শাখার আহবায়ক মোজাহিদ হোসাইন সাগর জানান, মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি ও লেগুনা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে দাপটের সাথে চলছে এসব নিষিদ্ধ গাড়ি। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। হচ্ছে প্রাণহানী। নিষিদ্ধ এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে তাহলে কারো কিছুই করার থাকবে না।

লোহাগাড়া ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মাহমুদুল ইসলাম জানান, মহাসড়কে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, ভ্যান, লেগুনা ও মালবাহী ভটভটি চলাচল নিষিদ্ধ। তবে মহাসড়কের উভয় পাশে ৩০ ফুট পর্যন্ত দেখার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। তবে স্টেশনে যানজট নিরসনে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রব জানান, মহাসড়কে নিষিদ্ধ গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৭/৮টি গাড়ি আটক করে মামলা দেয়া হচ্ছে। মাসোহারা নিয়ে মহাসড়কে নিষিদ্ধ গাড়ি চলাচল করতে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে দাবী করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!