Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

নিউজ ডেক্স: ভর্তুকি সমন্বয়ের অজুহাত দেখিয়ে ফের বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নতুন দর কার্যকর হবে। অর্থাৎ মার্চ মাসে যে বিল পরিশোধ

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্বাহী আদেশে এ মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে নতুন দর কার্যকর হবে।

সব বিতরণ কোম্পানির ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি লাইনের জন্য পাইকারি বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ৮ টাকা ৪৪ পয়সা এবং ৮ টাকা ৪৭ পয়সা। এর বাইরে ৩৩ কেভি লাইনের জন্য পিডিবির বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ টাকা ৬২ পয়সা, আরইবির ক্ষেত্রে ৬ টাকা ২৩ পয়সা, ডিপিডিসির ৮ টাকা ৫৬ পয়সা, ডেসকো ৮ টাকা ৫৮ পয়সা, ওয়েস্টজোনের ক্ষেত্রে ৭ টাকা ৪৬ পয়সা এবং নেসকোর ৭ টাকা ৪ পয়সা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এখন বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ পড়ছে ১২ টাকার মতো, আর বিক্রি করা হচ্ছে ৭ টাকায়। চলতি বছর বিদ্যুতে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। ধীরে ধীরে কয়েক বছর ধরে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। কম ব্যবহারকারী গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম কম বাড়বে, আর উপরের দিকে বেশি বাড়বে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায়। তেল-গ্যাস ও কয়লার আন্তর্জাতিক বাজারদর ক্ষেত্র বিশেষে একই থাকলেও আগের চেয়ে ডলারপ্রতি ৪০ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। এখানেই বিশাল গ্যাপ তৈরি হয়েছে। ডলারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য কাজ করছি।

তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দামে আধুনিক প্রাইসিংয়ে যাচ্ছি। ইনডেক্স ও ফর্মুলা করা হয়েছে, প্রতিমাসে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয় হবে, প্রতিবেশী দেশও প্রতিদিন সমন্বয় করে। সেখানে অতিরিক্ত বেড়ে গেলে সরকার অন্যভাবে সহায়তা করে।

বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হচ্ছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে, সে কারণে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে। আমরা তো খরচ উঠাতে চাচ্ছি। এখন গ্রাহকরা যদি একটু সাশ্রয়ী হন, তাহলে বিল আগের অবস্থায় থাকবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে— গ্রাহকদের মিতব্যয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা।

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে শূন্য থেকে ৫০ ইউনিটের দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিটের দাম ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের দাম ৬ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা ৩৪ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের দাম ১০ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৫১ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের দাম ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ২৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অধ্যাদেশ ২০২২ সংশোধনের কারণে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পায় সরকার। ওই অধ্যাদেশের আওতায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিলো বিদ্যুৎ বিভাগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!