নিউজ ডেক্স : বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৩টি জেলায় শতকরা ৯৮ ভাগ ম্যালেরিয়া রোগী পাওয়া যায় । দেশে সীমান্তবর্তী পাহাড় ও বনাঞ্চলবেষ্টিত হওয়ায় বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার জেলায় এর হার বেশি । আর পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বান্দরবানেই সবচেয়ে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেশি।
মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউট এ স্বাস্থ্য মেলা পরিবদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নকালে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক (ডা.) আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করা হবে। আর এরই মধ্যে আমাদের টার্গেট হল দেশে একজন ম্যালেরিয়া রোগীও থাকবে না।
এর আগে বান্দরবান জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রাঙ্গণ থেকে দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
পরে মহাপরিচালক স্বাস্থ্যমেলা পরিদর্শন শেষে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউট এ স্বাস্থ্য অধিদফতরের আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. এমএম কামরুজ্জামান. জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ (ভারপ্রাপ্ত) চেয়াম্যান থোয়াই হ্লা মং মার্মা, সিভিল সার্জন উদয় শংকর চাকমা প্রমুখ।
মহাপরিচালক জানান, গত বছর তিন পার্বত্য জেলায় আট লাখ কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হয়েছে। তবে চলতি বছর তা বাড়িযে ১১ লাখ করা হবে।
তথ্য সূত্রে জানা যাই, ২০১৬ সালে সারা দেশে ২৭ হাজার ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় বান্দরবানে। এর মধ্যে থানচি উপজেলায় ১ হাজার জনের মধ্যে ১১৪ জন এবং অপর তিন উপজেলা আলীকদম, রুমা এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় ৪০ জন রোগে আক্রান্ত হয়।
তথ্যসূত্রে আরও জানা যাই, ২০১০ সালে তিন পার্বত্য জেলায় (বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি) ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৮%। জনসচেতনতা, সরকারের কার্যকর উদ্যোগ এবং ব্র্যাকসহ অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর যৌথ প্রয়াসে ২০১৬ সালে কমে তা দাঁড়াই ৯৩ %।
জানানো হয়, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী লাগোয়া ভারত ও মিয়ানমার অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার উচ্চঝুঁকি রয়েছে। ওসব সীমান্ত এলাকা অত্যন্ত দুর্গম হওয়ার কারণে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মকর্তারা পৌঁছাতে পারেন না।
ন্যাশনাল ম্যালেরিয়া কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এমএম আকতারুজ্জামান বলেন, পাহাড়ের প্রতিটি পরিবারে কীটনাশকযুক্ত মশারি ব্যবহারে শত ভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। যার কারণে এই এলাকায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে।
তবে তিনি আরও বলেন, এবছর আগাম বৃষ্টি হওয়ার কারণে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে। জ্বরের রোগীর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাছের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।