ব্রেকিং নিউজ
Home | ব্রেকিং নিউজ | পড়া না পারায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুকে বেধড়ক মারধর

পড়া না পারায় দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুকে বেধড়ক মারধর

নিউজ ডেক্স : পড়া না পারায় মাদ্রাসায় পড়ুয়া দ্বিতীয় শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) হালিশহরের আল হাসনা মাদ্রাসায় ফাতেমা বেগম নামে এক শিক্ষক শিশু শিক্ষার্থীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার।

শিশুর মা জোসনা বেগম জানান, সেদিন (২৫ ফেব্রুয়ারি) একটা ওয়্যারড্রব নিয়ে মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলাম মাদ্রাসায়। গিয়ে দেখি তার মুখে জখমের দাগ। মেয়েকে এবং মাদ্রাসার শিক্ষিকাকে জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর পাইনি। পরে মেয়ের এক সহপাঠি আমাকে ইশারা করে পিঠ দেখতে বলে। পিঠে অনেকগুলো বেতের দাগ। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে শিক্ষিকারা আমার কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে। -বাংলানিউজ

তিনি আরও বলেন, আমি তাদের কাছে মেয়েকে রেখে গেছি। কিন্তু পড়া না পারার অপরাধে আমার মেয়েকে এমন নিষ্ঠুরভাবে মেরেছে, যা দেখে খুব কষ্ট পেয়েছি। মেয়েটা ভয় পেয়েছে। আমি চিন্তা করছি, এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

জানা গেছে, আল হাসনা মাদ্রাসায় আবাসিক সুবিধা রয়েছে। এ মাদ্রাসার নিচতলায় ছাত্র এবং পঞ্চম তলায় ছাত্রীরা অধ্যয়ন করে। মারধরকারী শিক্ষক ফাতেমা বেগম ‘হাদিস’ বিষয়ে শিক্ষা দেন দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের। মঙ্গলবার পড়া না পারায় আইমান, ফাতেমা, হালিমাসহ আরও কয়েকজনকে মারধর করেন ফাতেমা বেগম।

মারধরের শিকার আট বছর বয়সী শিক্ষার্থী আমেনা জান্নাত আঁখি জানিয়েছে, পড়া না পারায় কয়েকজনকে মারধর করেছেন ফাতেমা বেগম। এদের মধ্যে তাকে বেত দিয়ে বেশি পিটানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মো. হিজবুল্লাহ বলেন, আমি বিষয়টি রাতে জানতে পারি। তাই তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারিনি। শিশুটিকে এভাবে মারধর করায় বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই শিক্ষিকাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শিশুটির পরিবার আইনি পদক্ষেপ নিতে চাইলে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে সহযোগিতা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হলে ওই প্রতিষ্ঠানের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। তাছাড়া আমরা অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আশা করবো, শিক্ষার্থীর পরিবার আইনি প্রক্রিয়ায় যাবেন না।

প্রসঙ্গত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত করা সংক্রান্ত নীতিমালা-২০১১ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদেরকে হাত-পা বা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত বা বেত্রাঘাত, চক বা ডাস্টারজাতীয় বস্তু ছুঁড়ে মারা, আছাড় দেওয়া ও চিমটি কাটা, কামড় দেওয়া, চুল টানা বা চুল কেটে দেওয়া, হাতের আঙুলের ফাঁকে পেনসিল চাপা দিয়ে মোচড় দেওয়া, ঘাড় ধাক্কা দেওয়া, কান টানা বা ওঠবস করানো, চেয়ার, টেবিল বা কোনো কিছুর নিচে মাথা দিয়ে দাঁড় করানো বা হাঁটু গেড়ে দাঁড় করিয়ে রাখা, রোদে দাঁড় করিয়ে বা শুইয়ে রাখা কিংবা সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড় করানো এবং ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে এমন কোনো কাজ করানো যাবে না- যা শ্রম আইনে নিষিদ্ধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!