নিউজ ডেক্স : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আসন্ন ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরোধিতা করে বলেছেন, ‘স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীরবে-নিঃশব্দে ভোট চুরির প্রকল্প হলো ইভিএম। পৃথিবীর ২০০ দেশের মধ্যে মাত্র চারটি দেশে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চারটি দেশের সরকার এবং নির্বাচন কমিশন কোনোটাই বিতর্কিত নয়। বাংলাদেশের সরকার এবং নির্বাচন কমিশন দুটি বিতর্কিত। ফলে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ইভিএম অন্তরায়।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন প্রার্থীবিহীন একটা নির্বাচন করে সরকার ক্ষমতা দখল করেছে। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এখন আবার এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। এখন ক্ষমতা দখলের একটি নতুন প্রক্রিয়া দেখতে পাচ্ছি সেটি হলো ইভিএম।
আমির খসরু মাহমুদ আরো বলেন, ইভিএমের মাধ্যমে ভোট চুরির যে প্রক্রিয়ায় সেটা হলো একেবারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নীরবে-নিঃশব্দে ভোট চুরির একটি প্রকল্প ছাড়া কিছুই নয়। নির্বাচনের ফলাফল কী হবে সেটা নির্ভর করবে ইভিএমের প্রোগ্রামের ওপর। জনগণ যে ভোট দেবে সে ভোটটা কাকে দেবে তার পেপার ট্রেইল নেই। ট্রেইল না থাকার কারণে ইভিএমের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য জামিলুর রেজা চৌধুরী এ প্রকল্পে সই করেননি। ফলে সেখানে ভেরিফাই বা পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তার পরও নির্বাচন কমিশন রহস্যজনক কারণে ইভিএমে গেছে।
তিনি বলেন, যেভাবে সারারাত পেপার এর মাধ্যমে ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হয়েছে, প্রার্থীবিহীন নির্বাচনে জয়লাভ করেছে, একইভাবে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এই ভোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ সারাদিন ভোট দেবে তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ ইভিএমের প্রোগ্রামে যেভাবে সেট করা আছে সেভাবেই ফলাফল আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও প্রযুক্তির মাধ্যমে টাকা চুরি করা হয়েছে। ফলে ইভিএম একই প্রক্রিয়ায় ভোট চুরি হবে। এর মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে না।
আমীর খসরু বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের একজন প্রার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরেকজনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ তাকে মুন্সিগঞ্জের আলুক্ষেতে পাওয়া গেছে। সংরক্ষিত নারী আসনের এক প্রার্থীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরিয়ে ফেলার যে প্রক্রিয়া তা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবার নির্বাচনের সময় বিভিন্ন অভিযানের নামে বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক এজেন্টদের হয়রানি করা হয়। বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনে তুলে ধরেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এ ধরনের অভিযান এবার হবে না।
নির্বাচনের সময় বিএনপির এক প্রার্থীকে গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের জানিয়েছে ৩০ তারিখ পর্যন্ত আর কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। যদি না দৃশ্যমান বড় ধরনের কোনো অঘটন না ঘটে। তিনি আরো বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত পূর্বের কোনো মামলায় কোনো গ্রেফতার করা হবে না।