ব্রেকিং নিউজ
Home | দেশ-বিদেশের সংবাদ | চসিক নির্বাচন : অনড় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা

চসিক নির্বাচন : অনড় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা

নিউজ ডেক্স : দফায় দফায় বৈঠক, প্রত্যাহারের কঠোর বার্তা, তারপরও চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা অনড় অবস্থানে রয়েছেন। প্রত্যাহারে কেউই রাজি হননি। এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন আজ। প্রত্যাহারের শেষদিনে আসছেন কেন্দ্রের শীর্ষ নেতারা।

গতকাল রাতেও চসিক নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বিদ্রোহীদের সাথে বসে মনোনয়ন প্রত্যাহারের কঠোর বার্তা দিয়েছেন। এদিকে দুপুরে উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বিদ্রোহীদের ডেকে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করা নির্দেশ দিয়েছেন। দফায় দফায় বৈঠক-কঠোর বার্তা, তারপরও তাদেরকে নমনীয় করা যায়নি।

গতকাল রাতে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বাসা থেকে মিটিং শেষে বের হওয়ার সময় বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থীর সাথে কথা হলে তারা আজাদীকে বলেন, ‘কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। মেয়র পদের মতো দল থেকে কাউকে লিখিত প্রার্থী করা হয়নি। শুধু সমর্থন দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমরা সবাই নির্বাচন করলে নির্বাচন উৎসব মুখর হবে। ভোট কাস্টিং বেশি হবে। আমরা জয়ী হয়ে বহিষ্কারে রাজি। এখন প্রত্যাহারের আর সুযোগ নেই।’

দলীয় বিশ্বস্ত একটি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্রোহীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকের পরও তারা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় আজ দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সকালে চট্টগ্রাম আসছেন। একই সাথে চট্টগ্রাম আসছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি, চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। সকালে ঢাকা থেকে এসে সরাসরি মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রামের সকল এমপি এবং মেয়র প্রার্থীর সাথে বৈঠক করবেন। -আজাদী

এরপর বিকাল ৩টায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বর্ধিত সভায় উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও উপস্থিত থাকবেন।

এই ব্যাপারে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন আজাদীকে জানান, রবিবার সকালে কাদের ভাই (দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের) আসবেন। তিনি কাউন্সিলরদের নিয়ে বসবেন না। তিনি মেয়র নির্র্বাচন নিয়ে কিছু পরামর্শ দিবেন। আর কাউন্সিলরদের সাথে বসার কিছু নেই। কাউন্সিলরদের মনোনয়ন দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। প্রধানমন্ত্রী দল থেকে যাদের সমর্থন দিয়েছেন তাদের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে অন্যদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়া উচিত।

গতকাল দুপুরে কোতোয়ালী আসনের সব কটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের সরে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এই আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গতকাল চশমাহিলের বাসভবনে কোতোয়ালী থানাধীন সবক’টি ওয়ার্ড এবং উপমন্ত্রীর অনুসারী বলে যারা পরিচয় দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে কঠোর ভাষায় তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সন্ধ্যায় নন্দনকানস্থ চসিক নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির বাস ভবনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ডেকে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এসময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীনও উপস্থিত ছিলেন।

মিটিং শেষে বের হওয়ার সময় লালখান বাজার ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী দিদারুল আলম মাসুম, জামালখান ওয়ার্ডের প্রকৌশলী বিজয় কৃষান চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, আবদুল কাদের, তৌফিকুল আলম, মহিলা কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, আনজুমান আরা বেগমসহ অনেকের সাথে দেখা হয়। এর আগে গত ৫ মার্চ নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী এবং বিদ্রোহীদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে।

প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেও বিদ্রোহীদের দমাতে পারেননি দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করা হলেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহারে রাজি হননি। বরঞ্চ নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাহার করে উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবিতে সভার ভেতরে-বাইরে বিক্ষোভ করে স্লোগান দিতে থাকেন বিদ্রোহীরা।
আজ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনে যদি বিদ্রোহীরা প্রত্যাহার না করেন তাহলে আগামী ২৯ মার্চ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বনাম বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

error: Content is protected !!