নিউজ ডেক্স : স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষ বিধিনিষেধ সামান্য শিথিলতার সুযোগ নিয়ে গাদাগাদি করে ফেরি পারাপারসহ এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। এটা একেবারে সুইসাইড বা আত্মহত্যার শামিল।’
সোমবার (১০ মে) দুপুরে দেশের চারটি সীমান্ত এলাকার বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় করণীয়’ বিষয় নিয়ে জরুরি দিকনির্দেশনামূলক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হন।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের কারণে প্রতিদিন হাজারও মানুষ মারা যাচ্ছে। ভারতীয় নতুন ভ্যারিয়েন্ট এখন নেপালেও ছড়িয়েছে। সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্ট এখন আমাদের দেশেও চলে এসেছে। এমন সঙ্কটের সময়ে এই ভাইরাস দেহে নিয়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ যদি গ্রামে চলে যায়, তাহলে গ্রামে থাকা পরিবার-পরিজনসহ গ্রামবাসী গণহারে আক্রান্ত হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘শহরাঞ্চলেও মানুষ এখন বেপরোয়া চলাফেরা করছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় বিভাগীয় শহরে শপিংমলসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে মানুষ চলাফেরা করছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে চলতে দিলে ঈদের পর দেশে ভারত, নেপালের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে প্রতিটি সীমান্ত এলাকায় দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কঠোরভাবে কাজ করতে হবে। বর্ডার এলাকার ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তির পরিবারহ সবাইকে দ্রুত ও বাধ্যতামূলক নমুনা পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। বর্ডার এলাকার কোনো যানবাহন নিজ জেলার বাইরে মুভমেন্ট যেন করতে না পারে, সে ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
ভার্চুয়াল এ বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত ১৫ দিন সীমান্ত এলাকায় কতজন মানুষ ভারতে যাতায়াত করেছে, তার তালিকা জানতে চান। এছাড়া মন্ত্রী বর্ডার এলাকায় ব্যাপক হারে কোভিড পরীক্ষা চালানোর নির্দেশনা দেন। ভারত যাতায়াতকারীদের পরিবারের সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসার নির্দেশনা দেন।
ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রংপুর, সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, বিভাগগুলোর সীমান্তের জেলার ডিসি, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন প্রমুখ।
সভায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার জানান, খুলনা বিভাগীয় এলাকায় বর্তমানে দুই হাজার ৭০০ জন ভারত যাতায়াতকারী ব্যক্তি হোম কোয়ারান্টাইনে আছেন। তাদেরকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
এছাড়া ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করা ট্রাকচালক, সহকারীদের কোনোভাবেই মুভমেন্ট করতে দেয়া হচ্ছে না। কঠোরভাবে তাদের আইসোলেশন ব্যাবস্থায় জোর দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশ থেকে ভারত যাতায়াতকারী চালক-সহকারীদের কোয়ারান্টাইন নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক এ বি এ ম খুরশিদ আলম, এডিজি (পরিকল্পনা) মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা প্রমূখ।