নিউজ ডেক্স : বিদ্যমান কালুরঘাট সেতু মেরামতের মাধ্যমে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েটকে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে বুয়েটের দেয়া প্রস্তাবনায় রেল কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছেন বলে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট এক প্রকৌশলী জানিয়েছেন। সেতুটি মেরামতে বুয়েট যে পরিমাণ ফি দাবি করেছে তা নিয়ে বুয়েটের সাথে রেলওয়ের আলোচনা শেষে আগামী মিটিংয়ে চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিয়া বলেন, কালুরঘাট সেতু মেরামতে শীঘ্রই বুয়েটের সাথে রেলওয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। পরামর্শক হিসেবে বুয়েট তাদের একটি প্রস্তাবনা দিয়েছে। বুয়েটের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের প্রস্তাবনাটি আগামী মিটিংয়ে আলোচনার পর চূড়ান্ত হবে। কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ কাজের অগ্রগতির সাথে কালুরঘাট সেতু মেরামতের বিষয়টিও আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়ে এগুচ্ছি। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কয়েকজন লোকোমাস্টার জানান, পুরনো কালুরঘাট সেতু মেরামত করা না হলে পূর্বাঞ্চলের জন্য আমদানিকৃত নতুন মিটারগেজ ইঞ্জিন কালুরঘাট সেতু দিয়ে চলবে না। পুরনো ছোট মিটারগেজ ইঞ্জিন দিয়ে কক্সবাজার রুটের ট্রেন চালানো যাবে না। তাই সেতু মেরামতের কোনো বিকল্প নেই।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দোহাজারী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র ছোট ইঞ্জিন নিয়ে পটিয়া ও দোহাজারী যায় দুটি ডেমু ট্রেন। গত বছরের ৯ অক্টোবর কালুরঘাট সেতু সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে বুয়েটের সেতু বিশেষজ্ঞ দল। পরিদর্শন শেষে তারা রেলওয়ের কাছে একটি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছিল। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তখনকার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) আজাদীকে জানিয়েছিলেন, সেতুটি মেরামতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে বুয়েট রেল কর্তৃপক্ষের কাছে সাড়ে ১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রস্তাব করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটি সংস্কারের জন্য ১৯টি প্রস্তাবনাও দিয়েছিল বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল। এখন বুয়েটকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পর তারা কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজারগামী ট্রেন চলাচলের জন্য যা যা প্রস্তাব দেবে সেই অনুযায়ী কাজ করা হবে বলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজ ৬৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনে কক্সবাজার রুটে পর্যটকবাহী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের। রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, কালুরঘাট নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হতে আরো অনেক সময় লাগবে। নতুন রেল-কাম সড়ক সেতুর নতুন ডিজাইন এমন করেই করা হচ্ছে। সেতুর প্রাথমিক সমীক্ষা রিপোর্ট মে মাসে রেল মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করা হবে। তাতে কোনো ধরনের সংযোজন-বিয়োজন না থাকলে জুনে নতুন ডিজাইনের কাজ চূড়ান্ত হবে। এরপর একনেকের সভায় উঠবে এবং একনেকে পাশ হলে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। এখন কোরিয়ান দাতা সংস্থা নতুন কালুরঘাট সেতুর প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি করছে। তারা পুরোটাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি, ডিজাইন, বাজেট) নতুন করে করছে। -আজাদী প্রতিবেদন