
এলনিউজ২৪ডটকম : লোহাগাড়ার কলাউজানে নুরুন্নাহার বেগম (৩৫) নামে এক প্রতিবন্ধী প্রতিপক্ষের নানা অত্যাচারে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ আতংকে রয়েছে। সে ইউনিয়নের পূর্ব কলাউজানের আদারচর লতিয়ার পাড়ার আহমদ হোসেনের কন্যা। দীর্ঘদিন যাবত প্রতিপক্ষ তার চাচা আবুল হোসেন ও চার ছেলে মিলে তাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ও হামলা করে হয়রানি করে আসছেন বলেন ভূক্তভোগী জানান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জন্ম থেকে নুরুন্নাহার বেগমের দুই পা অচল। হাতে ভর করে চলাফেরা করেন। প্রতিবন্ধী হওয়ায় পিতা ও ভাইয়েরা তাকে পুরনো পৈত্রিক বসতভিটা তার নামে লিখে দেন। বাবা ও ভাইয়েরা একই ইউনিয়নের তিতারচর এলাকায় নতুন বাড়ি করে বসবাস করছেন। বিগত ২৩ বছর পূর্বে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের মাষ্টারহাট এলাকার নাছির উদ্দিনের সাথে তার বিয়ে হয়। সেই থেকে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বসতভিটায় একচালা টিনের ঘর করে স্বামীকে নিয়ে বসবাস করেন। দুই সন্তানের জন্ম হলেও কিছুদিন পর তারা মারা যায়। সম্প্রতি নিঃসন্তান এই দম্পতিকে পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে তার চাচা আবুল হোসেন ও তার চার ছেলে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা কিছুদিন পূর্বে প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহার বেগমের রান্নাঘর ভেঙ্গে দেয়। জোর করে বসতভিটার গাছপালা ও বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। দিন-রাতে ঘরের চালে ঢিল-ইট ছুঁড়ে মারে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছেন। এ ব্যাপারে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশী কেউ তাকে সহযোগিতা করলে তাদেরও মারধর, গালমন্দ, ভয়ভীতি দেখানোসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেন। তার ভাই জিয়াউর রহমান, আবদুল আজিজ, জেঠাত ভাই ফরিদুল আলম, ভাবী ইছমত আরা প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহারকে সহযোগিতা করায় তারাসহ ১৩ জনকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছেন। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন মহলের কাছে গিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এখন প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা দিয়ে নুরুন্নাহারকে মামলা-মোকদ্দমার খরচ চালাতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহার বেগম জানান, প্রতিপক্ষের শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। তাদের হুমকি-ধমকী, মামলা-হামলা ও হয়রানীর কারণে প্রতিনিয়ত উচ্ছেদ আতংক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা রাস্তাঘাটে আমার স্বামীকে দেখলে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। প্রতিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় বিভিন্ন মহলকে অবহিত করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে জানান।

অভিযুক্ত আবুল হোসেন জানান, প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহার আমার ভাতিজি হয়। বিরোধীয় সম্পত্তি আমার দুই বোন আলীবি ও সুফি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত। ওই সম্পত্তি দীর্ঘদিন আমার দখলে ছিল। আমাকে না জানিয়ে সম্প্রতি তারা আমার দুই ভাতিজা ফরিদুল আলম ও আবদুল আজিজকে বিক্রি করে দেয়। এখন তারা সবাই মিলে আমাকে উক্ত সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করে নুরুন্নাহার বেগমকে ঘর করে দিয়েছে। তারা আমাদেরকে মামলা-হামলা করে হয়রানি করছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী গ্রাম আদালতে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষের কারণে তাদের বিরোধ মিমাংসা করা সম্ভব হয়নি।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান হাবিব জিতু জানান, প্রতিবন্ধী নুরুন্নাহার বেগমকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা ও নিরাপত্তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Lohagaranews24 Your Trusted News Partner